গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে মারা গেছে ২৫ জন, তবুও মানুষ উদাসীন

দেশে এখন খুব কম মানুষই করোনা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলছে। হাবভাবে এমনটা মনে হয় যে করোনা কিছুই না, দেশে করোনার আর অস্তিত্ব নাই, বাঙ্গালীর ভয়ে করোনাই পালিয়েছে, দেশ ছেড়ে চলে গেছে বহু দূরে। আর এসব করোনা টরোনা শুধু বড় লোকেরই হয়, সাধারন মানুষের করোনা হয় না। হলেও তেমন ক্ষতি করে না, ঔষধ খেলেই ভাল হয়ে যায়। আসলেই কি তাই? পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় সব শ্রেনী পেশার মানুষেরই করোনা হয়েছে, বয়সও এক্ষেত্রে কোন ফ্যাক্টর না, ধনী কিংবা গরী্ব সব লিঙ্গেরই করোনা হয়েছে। মানুষ আসলে এ সব তথ্য আমলে নিতে চাচ্ছে না। নিয়ম না মানার মধ্যেই যেন সাধ বেশী। সরকার যা বলে মানুষ তার উল্টাটা করতেই বেশী পছন্দ করে। যদি সরকারী নির্দেশনা আসত করোনাকালে সবাই বেশী বেশী বাহিরে যাবেন, কেউ মাস্ক পড়তে পারবেন না, সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত চালু থাকবে, সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। তাহলে মানুষ হয়ত বিপরীত কাজটা করত। তাতে করোনা কালে ভাল কাজে আসত।

সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা অর্থাৎ একে অপর থেকে ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রেখে চলা কোন কঠিন কাজনা। সরকার বলেছে বলেই হয়ত মানুষের তাতে এত অনিহা। মাস্ক পড়াও এখন আর তেমন কোন কষ্টের কাজ না। এটিও মানুষ পরতে বিরক্ত হচ্ছে। করোনাকে এমন হালকাভাবে দেখা উচিৎ না। তাতে বিপদ আসার সম্ভাবনা বেশী। আত্বীয় স্বজন ও পরিচিত জনদের মধ্য অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্য অনেকে মারাও গেছেন। আমার চিনা জানা ও স্বজনদের মধ্য করোনা ভাইরাসে ৭ জন মারা গেছেন, এছাড়া যে বিল্ডিংয়ে থাকি সেখানে ১ জন মহিলা ও পাশের বিল্ডিংয়ে আরেক জন পুরুষ মারা গেছেন। কার কার করোনা ভাইরাস হয়েছে তা আর এখন তেমন একটা প্রকাশ পায় না। শুধু মারা গেলেই জানা যায় করোনায় মারা গেছে। বেশীর ভাগ মানুষই উপসর্গ থাকলেও করোনা ভাইরাসের টেস্ট করে না। এমনিতেই ঔষধ খেয়ে ভাল হয়ে যায়। অবস্থা খারাপ হলেই টেস্ট করে। ফলে যারা করোনা ভাইরাসের টেস্ট করায় শুধু তাদের সংখ্যাই সরকারি পরিসংখ্যানে থাকে। যা বাস্তবে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা থেকে অনেক কম।

গত ২৪ ঘন্টায়ও দেশে ২৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আর একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছে ১৭৩৬ জন। এটা শুধু সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী। বাস্তবে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশী। তাই করোনাকে হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নাই। সারাবিশ্বে করোনার ২য় ওয়েভ চলছে, আসছে শীতে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আরও ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পরার আশস্কা করা হচ্ছে। তাই সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে, মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। তবেই এর তীব্র প্রকোপ থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে।