দেশের অবস্থা এত খারাপ হবে যে বিদেশীরা তা বুঝতে পেরে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে!

(১) একজন লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ছেড়ে দেশে ফিরতে বলেছে কিংবা ইতিমধ্য ফিরে গেছে-এর অর্থ দাড়ায় এই যে বাংলাদেশের অবস্থা সামনের দিনগুলিতে এতই খারাপ হবে যে তা বিদেশীরা আছ করতে পেরে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

আমার বক্তব্যঃ বাংলাদেশের অবস্থা সামনে আরও খারাপ হবে তার গবেষনালব্ধ ও বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নাই। শুধু অনুমানের ওপর ভর করেই এমনটি বলা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত উপরোক্ত দেশগুলিতে ইতিমধ্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মহামারি রূপ ধারন করেছে। এইদেশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। তাই এই সময়ে বাংলাদেশে থাকা আমেরিকান ও ব্রিটিশসহ অন্যান্য দেশের মানুষ এই মহামারিতে নিজের স্বজনদের পাশে থাকতে হয়ত বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছে বা যাচ্ছে। আর এই সময়ে যেহেতু বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই লকডাউন চলছে তাই বাংলাদেশে থেকে তেমন কোন কাজও করতে পারবে না। তাই তারা চলে গেছেন কিংবা যাচ্ছেন।

(২) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নামে একটি রিপোর্ট কয়েকদিন যাবৎ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। যা নাকি বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী মিশনগুলিতে পাঠানো হয়েছে, এইটা নাকি একটি গোপন নথি। এই গোপন নথিতে নাকি বলা হয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার ধারন করবে এবং তাতে নাকি ৫ লক্ষাধিক মানুষ বাংলাদেশে মারা যাবে। বাংলাদেশ নাকি এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে না। আমার মন্তব্য ও জিজ্ঞাসাঃ এই নথি শুধু বিদেশী মিশনগুলিতেই আসবে কেন? এটিতো গোপন কোন বিষয় নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তার পাঠানো এই নথি কিংবা পূর্বাভাসেরও বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নাই, শুধু ধারনার ওপরই এটি প্রতিষ্ঠিত। এর আগেও বাংলাদেশে এক বন্যার সময় তারা আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশে ১ কোটি মানুষ মারা যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা কিন্তু হয়নি। আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কি ইউরোপ কিংবা আমেরিকা্র দেশগুলিকে এই মহামারির পূর্বাভাস দিয়েছিল, দিলে কেন দেশগুলি করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ হল। আর যদি না দিয়ে থাকে তা হলে বাংলাদেশের ব্যপারে তারা এই পূর্বাভাস কোথা থেকে পেলো।

(৩) দেশে অনেকে বলছেন, করোনা ভাইরাস যদি বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারন না করবে তা হলে সরকার কেনো এতো হাসপাতাল বানাচ্ছে, সরকারের পাশপাশি দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতাল বানানোর ঘোষনা দিচ্ছে।আবার সারা দেশে কেনো করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য নতুন নতুন পরীক্ষা কেন্দ্র চালু করছে। আবার মন্ত্রী কেনো এতো পিপিই ও ভেন্টিলেটর সংগ্রহ করছে।

আমার বক্তব্যঃ যদি কোন কারনে মহামারি আকার ধারনই করে তার জন্য এই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা যেহেতু সরকারের হাতে এখনো সময় আছে। দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলিতে করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা আজ পর্যন্ত ৪০৩৪ জন। আর এই দক্ষিন এশিয়ায় জনসংখ্যা দেড়শ কোটির ওপরে। এই ডাটা থেকেও ধারনা করা যেতে পারে যে বাংলাদেশ কেনো দক্ষিন এশিয়ার কোন দেশেই করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারন করবে না। করলে ইতিমধ্যই হয়ত করত। এর কারন হতে পারে দক্ষিন এশিয়ার আবহাওয়া। এই দেশগুলির প্রতিটিরই তাপমাত্রা বর্তমানে ৩০ ডিগ্রীর ওপরে। অপরদিকে মহান সৃষ্টিকর্তা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে। আসুন করোনা ভাইরাসের আক্রমন থেকে বাঁচতে সকলে বিশেষজ্ঞদের দেওয়া নিয়ম কানুনগুলি মেনে চলি, নিজ ও পরিবারকে আর কটা দিন ঘরেই আবদ্ধ রাখি এবং এই সময়ে মহান আল্লাহ তাআলাকে বেশী বেশী স্মরন করি।