সব লীগের মধ্যে থাকা পাপিয়াদের বিরুদ্ধে একশন শুরু হয়ে গেছে
বিডি খবর ৩৬৫ ডটকমঃ
পাপিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়ে গেছে। শনিবার দুপুরে র্যাব-১ এর সদস্যরা শামীমা নুর পাপিয়া, তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে সুমন মতি ও তাদের আরো দুই সহযোগীসহ হযরত শাহজালাল বিমান বন্দর দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাবার সময় আটক করে। র্যাপ তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান দেশী-বিদেশী মুদ্রা উদ্ধার করে। পরে পাপিয়া দম্পতির ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান টাকা, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে। র্যাব তাদের অধীনে থাকা ইন্দিরা রোডে বিলাসবহুল দুটি ফ্লাট, রাজধানীর এফডিসি গেটের পাশে যৌথ মালিকানায় গাড়ির সো রুম, নরসিংদীতে দুটি ফ্লাট, একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার ও বাসাইল এলাকায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের প্লটের সন্ধান পায়। বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি গাড়িও রয়েছে পাপিয়া দম্পতির। অতি অল্প সময়ে তারা বিপুল জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছে। তাদের বৈধ আয়ের তেমন কোন ব্যবসা ছিল না।
র্যাব-১ জানিয়েছে পাপিয়া ও তার স্বামী নারী পাচার, অসামাজিক কার্যকলাপ, দেহ ব্যবসা, জাল মুদ্রা, চোরা চালান, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এ ছাড়াও তারা নিজস্ব বাহিনী দিয়ে চাঁদাবাজি ও মুক্তিপন আদায়ের সাথে জড়িত ছিল। বিদেশে পাঠানোর কথা বলে তারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকাও নিয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছে র্যাব। নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা প্রলোবন দেখিয়ে যুবতিদের এনে রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে দেহ ব্যবসাও চালিয়ে আসছিল কুখ্যাত এই পাপিয়া ও তার স্বামী। গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুট সারা বছরই পাপিয়ার নামে বরাদ্ধ থাকতো। এই স্যুটে পাপিয়া জোরপূর্বক মেয়েদের দিয়ে দেহ ব্যবসা চালাতেন বলে তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। এই হোটেলে প্রতিদিন আড়াই লক্ষ টাকা করে বারের বিল পরিশোধ করতেন পাপিয়া। সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে তদবির বানিজ্যও চালিয়ে আসছিলেন পাপিয়া।
শামীমা নুর পাপিয়া নরসিংদী সরকারী কলেজে পড়াশুনা করেছেন বলে তার ফেসবুক পাতা থেকে জানা যায়। তার জন্ম ২৭ শে অক্টোবর ১৯৯১ সালে নরসিংদী শহরের বাসাইল এলাকায়। সে হিসাবে তার বয়স মাত্র ২৯ বছর। তার অবৈধ আয়ের সিংহভাগ আসে দেহ ব্যবসা থেকে। অতি অল্প সময়ে পাপিয়া দম্পতির অঢেল সম্পদের মালিক হওয়া সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়। অল্প বয়স থেকে পাপিয়া বেসামালভাবে চলাফেরায় অব্যস্ত ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
এত অল্প বয়সে পাপিয়া কিভাবে যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলার সভাপতি হয়েছে তা নিয়ে নরসিংদীসহ সারাদেশে নানা গুঞ্জন চলমান আছে। মদ, অর্থ আর নারী দিয়েই পাপিয়া যুব মহিলা লীগের এই পদ লাভ করেছেন বলে আলোচনা হচ্ছে। কারা পাপিয়াকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে সহযোগিতা করেছে তা নিয়ে গোয়েন্দারা কাজ করছেন বলে জানা গেছে। যুব মহিলা লীগের এই গুরুত্বপূর্ণ পদ ব্যবহার করে পাপিয়া তার পাপের সম্রাজ্য আরো বড় করেছেন। এটি ক্ষমতাসীন দলের ভিতরে শুদ্ধি অভিযানের অংশ বলেই জানা গেছে। সকল লীগের ভিতরে থাকা পাপিয়াদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে আওয়ামীলীগের ওপর মহল থেকে জানা গেছে। ইতিমধ্য আদালত পাপিয়া দম্পতির ৩ মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। শনিবার গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার পরই যুব মহিলা লীগ থেকে পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।