পাপাচার, অনাচার, অত্যাচারে ভারসাম্যহীন ধরনীতে ভারসাম্য আনতেই করোনা ভাইরাসের আগমন

বিডি খবর ৩৬৫ ডটকমঃ


সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাসের কারনে। সািশ্বে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২১৯৩৪৫ জন, এর মধ্য মৃত্যু বরন করেছে ৮৯৬৯ জন, চিকিৎসাধীন আছেন ১২৪৬৩১ জন। প্রতি ক্ষনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। বিশ্বের ১৭৬টি দেশে ইতিমধ্য ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। বাংলাদেশেও এই পর্যন্ত ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছে এই ভাইরাসে। এর মধ্য গতকাল ১ জন ৭০ বছর বয়সের বৃদ্ধ মারা গেছেন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রিয় স্বদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। শুনেছি তার দাফন-কাপন চিরাচরিতভাবে হবে না। ভাবতেই খারাপ লাগছে কেননা তারও স্বজনরা রয়েছেন, এই অবস্থার পরিপেক্ষিতে না জানি তাদের কি অবস্থা হয়েছে। অত্যান্ত ঘন বসতির একটি দেশ বাংলাদেশ, এই ভাইরাসের ছোবলে মহামারি আকার ধারন করতে পারে প্রিয় এই মাতৃভূমি।


এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি। তাই যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা চলছে তা সন্তুসজনক নয় ও তা কাজেও আসছে না। বিশ্বের বড় বড় মহা উন্নত দেশগুলোও এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে পারছে না। বরং উন্নত দেশ চীনেই এর উৎপত্তি। চীনে প্রায় ৩৫০০ মানুষ মারা গেছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। চীনের পর অতি উন্নত দেশ ইতালীতে এখন মহামারি আকার ধারন করেছে এই ভাইরাসের আক্রমনে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজারের ওপরে। বড় বড় চিকিৎসকরা অতি উন্নত ও দামি ঔষধ দিয়েও এই ভাইরাসকে পরাস্ত করতে পারছেন না। গোটা ইউরোপে এই ভাইরাস মহামারি আকার ধারন করেছে। এতো শক্তিশালী ও অতি উন্নত প্রবল পরাক্রমশালী যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসের হানায় মারা গেছে ১৫০ জনের বেশী। তারা পারলো না এই ভাইরাসকে পরাস্ত করতে। তা হলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে এই ভাইরাস কোথা থেকে আসলো, কেই বা এর কারিগর। কেনই বা এই ভাইরাস এই সময়ে হানা দিল। আর এই প্রশ্নের মধ্যই এর রহস্য লোকায়িত। আসুন একটু বিস্তারিত আলোচনা করি।

পৃথীবিতে চলছে এখন আদিম যুগের মত অনাচার। দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্ব নেতারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলিকে নিয়ে রক্তের হুলি খেলছেন। কোন অবস্থায়ই এই হোলি খেলা বন্ধ হচ্ছে না। দুর্বল দেশগুলিকে শাসন ও করায়ত্ত করে রাখার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছেন। কেউ তাদের ক্ষমতাকে ধমিয়ে রাখতে পারছে না। আমেরিকা, ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স ও রাশিয়া সারাবিশ্বকে করায়ত্ত্ব করে রেখেছে। এরা মিলে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনসহ অনেক মুসলিম দেশকে ধংসের দাড়প্রান্তে নিয়ে গেছে। প্রতিদিনই এখানে হোলি খেলা চলছে রক্ত দিয়ে। কিভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে মায়ানমারের সামরিক জান্তা তা প্রত্যক্ষ করেছে সারাবিশ্ব। বৃহৎ শক্তিগুলির ইন্দনেই এই হত্যাযজ্ঞ হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে ওই বৃহৎ শক্তিগুলির কুটচালে। সারাবিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে তারা অশান্তি ছড়িয়ে দিয়েছেন শয়তানের মত বুদ্ধি দিয়ে। সারা বিশ্বের অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলিকে তারা কৌশলে পরাধীন করে রেখেছে। কোন কিছু দিয়েই বিশ্ব নেতাদের ধমানো যাচ্ছিল না। সারা পৃথিবী ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে যা মানুষের পক্ষে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। অথবা মানুষের সেই ইচ্ছাও নেই।
ঘরে বাইরে চলছে নানা অনাচার, পৃথীবির অধিকাংশ মানুষ আজ নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছু ভাবে না। জীনা, হারাম কাজ, ঘোষ, খুন, রাহাজানি এই সব নিয়েই মানুষ এখন বেশী ব্যস্ত। এমনকি টাকার লোভে কুটচালে পড়ে মানুষ নিজের সন্তানকেও হত্যা করছে। এমনই নানা অনাচারে পৃথিবী যখন তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে তখনই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নানা বালামশিবত আসে। এই করোনা ভাইরাসের আক্রমন হয়ত তেমনই কোন ইশারায় হতে পারে যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে ও পাপাচার কমিয়ে দেয়, পৃথিবী কিছুটা ভারসাম্য ফিরে পায়।
মুসলমানদের ঈমান কোন পর্যায়ে চলে গেছে যে আমরা করোনা ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষার জন্য মসজিদে যেয়ে নামাজ পড়া বন্ধ করে দিয়েছি। আবার কোথাও মসজিদের মাইকে আজানের মাধ্যমেই বলা হয় আপনারা বাসায় নামাজ পড়ুন। ঈমান সাহেব থেকে মুসল্লি সকলেই আমরা দুর্বল ঈমান ধারন করি নচেৎ্‌ ঈমাম সাহেব কেন সাহস যোগাতে পারলেন না, বলতে পারলেন না তোমরা মসজিদে আস, নামাজ কায়েম কর।
আর এসব কিছু খেয়াল করলে দেখা যাবে এই অবস্থায় করোনা ভাইরাসের হস্তক্ষেপ হয়ত বা মহান আল্লাহ তাআলার ইশারায়ই হয়েছে। এতে করে মানুষ হয়তবা নিজেকে অতিশক্তিশালী কিংবা প্রবল পরাক্রমশালী ভাবা একটু কমিয়ে দিবে। এতে পৃথিবী হয়ত একটু ভারসাম্য ফিরে পাবে।

একটু খেয়াল করলে দেখবেন বিশ্ব সম্রাট ট্রাম্প সপ্তাহ ধরে জনসম্মুখে আসছেন না আর গাড় তেরা করে কোন দেশকে শাসাচ্ছেনও না। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন,করোনার ভয়ে বৃটেনের রানী রাজাসহ রাজপ্রাসাদ ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বড় বড় দেশের বড় বড় বিশ্ব নেতাদের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, ইয়েমেন কিংবা এই সমস্ত দেশে যুদ্ধ বিস্তারে আপাতত তারা ক্ষান্ত। এখন পৃথিবীতে কিছুটা ভারসাম্য ফিরে এসেছে বলে মনে হয়। মানুষের মধ্য ভয় ঢুকেছে, পাপাচারও অনেকটা কমে গেছে। পাপে ডুবে আছে পুরা পৃথিবী তাই মনে হয় যথাযত সময়েই করোনা ভাইরাসের আগমন হয়েছে পাপাচারের মহৌষধ হিসাবে।
বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিকসহ সকলদিক বিবেচনা করলে দেখা যায় এখানে ন্যয় নীতির কোন বালাই নাই, চারদিকে মানুষ ব্যস্ত লুটপাটে, দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার বেড়েই চলেছে, সমাজ চালায় মন্দ লোকেরা, প্রকাশ্যে চলে মাদকের ব্যবসা, রক্ষকেরা হয়ে গেছে ভক্ষক, ভাল মানুষ সমাজে নিগৃহীত হচ্ছে। এইসবের লাগাম কোন অবস্থাতেই টানা যাচ্ছে না। এই সব নির্বিচারে চলতে পারে না অনিদৃষ্টকাল। তাই মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেই হয়ত এই করোনা ভাইরাসের আক্রমন শুরু হয়েছে যাতে করে মানুষ যেন কিছুটা বুঝতে পারে মানুষের অমানুষিক, অমানবিক, অসামাজিক কিংবা সকল অনাচারকে রুখতেই এসেছে করোনা ভাইরাস। একমাত্র মহান আল্লাহ তাআলাই পারেন এই ভাইরাসের আক্রমন থেকে মানুষকে বাঁচাতে ও এর প্রকোপ ঠেকাতে। তাই আসুন সকলেই এই ভাইরাসের আক্রমন থেকে বাঁচতে মহান রাব্বুল আলামীনের সাহায্য কামনা করি ও আল্লাহ তাআলার নির্দেশিত পথে চলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *