সংসদে বিএনপির নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আগে কেনো শপথ নিলেন না জাতি জানতে চায়
বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্য ফ্রন্ট থেকে মোট ৮ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এদের সকলেই দীর্ঘদিন শপথ গ্রহন থেকে বিরত ছিলেন। প্রথমে ঐক্য ফ্রন্টের পক্ষ থেকে যৌথভাবে ঘোষনা করা হয়েছিল এই ফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত কেউই শপথ গ্রহন করিবেন না। কারন হিসাবে বলেছিলেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য হয়নি। তাই তারা শপথ গ্রহন করবেন না।
কিন্তু অনেকে মনে করেন এই নির্বাচনে নজিরবিহীন ভরাডুবির কারনে এই ফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত ৮ জন সদস্য সংসদে তেমন কোন ভুমিকা রাখতে পারবেন না বলেই ফ্রন্টের স্ব স্ব দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা শপথ গ্রহন থেকে বিরত থাকেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন ঐক্য ফ্রন্টের নির্বাচিত ৮ জন শপথ নিলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সংসদ গ্রহনযোগ্যতা লাভ করবে। তাতে লাভ হবে আওয়ামীলীগের তাই তারা সংসদকে বিতর্কিত ও অগ্রহনযোগ্য রাখতেই শপথ গ্রহন না করার সিদ্ধান্ত নেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন বিএনপিসহ ঐক্য ফ্রন্টের বাঘা বাঘা নেতারা বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন তাদের নেতিবাচক রাজনীতির কারনে। ঐক্য ফ্রন্টের একমাত্র হেভিওয়েট নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জয় লাভ করেছেন। তা ও আবার ঠাকুর গাওয়ের নিজ আসন থেকে না, খালেদা জিয়ার বগুড়ার আসন থেকে। তাই ঐক্য ফ্রন্টভুক্ত দলগুলির সিনিয়র ও হেভিওয়েট নেতারা সংসদে নির্বাচিতদের শপথ গ্রহন করতে বাঁধা প্রধান ও নিষেধ করেন।
এরই মাঝে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর শপথ নেন অনেকটা আকর্ষিকভাবে। তখন এই শপথ নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের মধ্য বিতর্কের ঝড় উঠে। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বার্তা দেন যে ঐক্য ফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত অন্যরাও শপথ গ্রহন করবেন। এরই মাঝে গনফোরাম থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খানও শপথ গ্রহন করেন। এ দুজনের শপথ গ্রহনের পর এদেরকে জাতীয় বৈঈমান হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় ঐক্য ফ্রন্ট থেকে। যদিও এ দুজন তাদের সংসদে যোগদানের কারন ব্যাখ্যা করেছেন তাদের মত করে।
এর পর বাকি থাকলো বিএনপির থেকে নির্বাচিত ৬ জন সংসদ সদস্য। ভিতরে ভিতরে এরাও শপথ গ্রহনের জন্য সংসদ সচিবালয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল। অপরদিকে বিএনপির হাইকমান্ড থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিএনপির সাংসদরা কেউ শপথ গ্রহন করবে না। যদি কেউ শপথ গ্রহন করে তবে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে বলেও হুশিয়ারী দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির মিটিং থেকেও সিদ্ধান্ত আসে বিএনপির কেউ শপথ গ্রহন করবে না। এরই মাঝে ঠাকুরগাওয়ের বিএনপি দলীয় সাংসদ জাহিদুর রহমান জাহিদ শপথ গ্রহন করলে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। জাহিদ জানিয়েছিলেন বাকিরাও শপথ গ্রহন করবে। আজ অনেকটা নাটকীয়ভাবেই বিএনপির চার সাংসদ শপথ গ্রহন করে সংসদ অধিবেশনে অংশ গ্রহন করেছেন।
কোনভাবেই আটকানো যাচ্ছিল না বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের। আগে থেকেই এদের শপথ গ্রহনের কথা রাজনৈতিক মহলসহ মিডিয়ায় আলোচনা হচ্ছিল। আজ শপথ গ্রহনের পর মির্জা ফখরুল জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নির্দেশেই এরা শপথ গ্রহন করেছে। মির্জা ফখরুল ইসলামও নাকি মঙ্গলবার শপথ গ্রহন করবেন। জনগন যাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলো তারা এতোদিন কেনো শপথ গ্রহন করলেন না এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আসলেই কি তারেক জিয়ার নির্দেশে নাকি সাংসদ নিজেরাই নিজ ও নিজ এলাকার ভোটারদের চাপে শপথ গ্রহন করে সংসদে অংশ নিয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তর এখন রাজনীতি সচেতন প্রায় সকলেই জানেন।