রামপাল, পদ্মা সেতু এবং দালালীর রাজনীতি

ডেস্ক রিপোর্টঃবিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

বর্তমান মহাজোট সরকার দেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মিটাতে রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হাতে নেওয়ার পর থেকেই দেশী বিদেশী চক্রের মদদপুষ্ট কিছু ব্যক্তি, সংগঠন বা রাজনৈতিক দল এর বিরুদ্ধে নেতীবাচক প্রচারনা চালাতে থাকে। এদের মধ্যে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের নে্তৃত্বাধীন তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সভা-সমাবেশ, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তারা দেশবিরোধী প্রচারনা চালাতে থাকে। ইতিমধ্যেই এই গ্রুপ রোড মার্চ, লংমার্চের নামে নতুন একধরনের পিকনিক- রোড পিকনিক বা লংপিকনিক সহ হরতাল পর্যন্ত করেছে।

Rampal

এই তাত্ত্বিক দালালগোষ্টীর বক্তব্য, রামপালে যদি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরী হয় তাহলে সুন্দরবনের ব্যপক ক্ষতি হবে এবং সেই সাথে সুন্দরবনের পরিবেশসহ জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। আরো অনেক ধরনের নেতিবাচক কথা বার্তা বলে যাচ্ছে।

অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের পক্ষে নানা রকম, তথ্য-উপাত্ত, যুক্তি-তর্ক দিয়ে বলা হচ্ছে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করা হলে তা পরিবেশের কোন রকম ক্ষতিসাধন হবে না। আমাদের দেশে গ্যাসের স্বল্পতার কারনে এ প্রকল্পে গ্যাস ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অপরদিকে ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে ইউনিট প্রতি দাম অনেক বেশী পড়ে যায়। আর কয়লা দিয়ে অর্ধেক খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। অত্যান্ত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ প্রকল্প তৈরী করা হচ্ছে।

coal power plant_0

আবার এ প্রকল্প সুন্দরবনে হচ্ছে না। হচ্ছে রামপালে যা সুন্দরবনের নিকটতম প্রান্ত থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। আর সুন্দরবনের যে অংশকে বিশ্ব ঐতিয্যের অংশ করা হয়েছে তা থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে। এ প্রকল্প সরকারী দল কিংবা আওয়ামীলীগের জন্য করা হচ্ছে না, তা করার সুযোগও নাই। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিরাট জনগোষ্টীর বিদ্যুতের চাহিদা মিটানো যাবে এবং কয়লা ব্যবহার হলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও অনেক কম হবে। ফলে বিদ্যুৎখাতে সরকারের ভর্তুকী কমবে। উপকৃ্ত হবে দেশবাসী, লাভ হবে দেশের।

Podma setu

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে সমশ্যা কোথায়?

বাংলাদেশে বড় বড় যত প্রকল্প হয় তার প্রাথমিক স্তরে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হয়। এ সমস্ত কোম্পানীর স্থানীয় এজেন্টরা কাজ পাওয়ার জন্য লবিস্ট হিসাবে কাজ করে। যখন কোন একটি কোম্পানী কাজ পেয়ে যায় তখন অন্য কোম্পানীগুলি এই কোম্পানীর বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার চালাতে থাকে। স্থানীয় দালালরা তখন পত্র-পত্রিকা, সভা-সমাবেশ কিংবা টিভি টকশোতে এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা কিংবা অন্য কোনো ইসু তৈরী করে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে থাকে। অনেক সময় এই দেশবিরোধী শক্তি সফলও হয়। এদের মিথ্যাচারের কারনেই পদ্মা সেতু থেকে বরাদ্ধকৃত অর্থ ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্র তৈরী হয়েছিল। এর ফলে পদ্মা সেতু প্রকল্প বিলম্বিত হল। আবার এ দালাল গোষ্টীই সরকার যখন পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ নিজস্ব অর্থায়নে করার সিদ্ধান্ত নিল তখন দেশবাশীকে বুজাবার চেষ্টা করল সরকার তা করতে পারবে না। তা হলে দেশের সমস্ত টাকা এই প্রকল্পে চলে যাবে।

World bank

পদ্মা সেতু নিয়ে কানাডার একটি আদালতে দূ্র্নীতি্ মামলা হয়। সর্বশেষ মামলার রায়ে বলা হয় পদ্মা সেতু দূুরনীতি মামলা ভিত্তিহীন। তাহলে আমাদের দেশের কথিত শুশীল সমাজের দালালরা মিথ্যাচার করেছেন এই কারনে যে এরা হয়ত দেশি-বিদেশী চক্রের কাছ থেকে পয়সা নিয়ে তাদের পক্ষে মিথ্যাচার করেছেন। এই দালাল গোষ্টীর বিচার হওয়া উচিত। আশা করা যায় যারা দেশের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সরকার অথবা দেশ প্রেমিক ব্যাক্তিরা অচিরেই মামলা করে মুখোশ উম্মোচন করে দিবেন। এই দেশ বিরোধী দালালরা বিদেশী পয়সা ব্যবহার করে শুশীল সমাজের লেবাস ধারন করে।

Rampall

সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, মাহবুব উল্লাহ, আসিফ নজরুল, ড পিয়াস করিম, নুরুল কবির, মরতুজা ছাড়াও আরো অনেকে টিভি টকশোতে বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে অথবা অন্য কোন সংস্থা বা দেশের পক্ষে পদ্মা সেতুতে দূুরনীতি হয়েছে তা প্রমান করার জন্য মিথ্যাচার করতে করতে মুখ দিয়ে ফেনা বের করে ফেলত। আজ সময় এসেছে এদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোর। এরা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, মানবতার শত্রু।

উপোরোক্ত চক্রই এখন আবার রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে অতি অল্প সময়েই দেশপ্রেমিক জনতা এই দালাল গোষ্টীকে উপযুক্ত শিক্ষা দিবে। চলবে…………

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *