হাজার হাজার শিশু অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথলিক চার্চে যৌন নিপীড়নের শিকার
অনলাইন ডেস্কঃবিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
এক সমীক্ষায় অস্ট্রেলিয়ার চার্চগুলোর যাজকদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার শিশুকে যৌন নির্যাতন করার প্রমাণ পেয়েছে। গত ছয় দশকে যাজকদের হাতে দেশটিতে প্রায় চার হাজার ৪৪০ জন শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে বলে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে গঠিত ‘রয়্যাল কমিশন’ সোমবার সিডনিতে এ তথ্য প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে ১৯৫০ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ক্যাথলিক যাজকরা শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। রিপোর্টে দাবী করা হয়, ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৪ হাজার ৪৪০ জনেরও বেশি ব্যক্তি যৌন নিপীড়নের শিকা্র হয়।
কমিশন জানিয়েছে এ সব ঘটনায় এক হাজার ৮৮০ জন যাজক জড়িত ছিলেন। যাজকদের মধ্যে ৯০ ভাগই পুরুষ আর ১০ ভাগ নারী রয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ার মোট ক্যাথলিক যাজকদের সাত শতাংশই শিশু যৌন নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত। অস্ট্রেলিয়ার যাজকদের বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে শিশুকামীতার অভিযোগ তদন্তে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় ২০১২ সালে ঘটনার তদন্তে রয়াল কমিশন গঠন করা হয়।
প্রথমে যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদেরর জবানবন্দি নেয় ‘রয়্যাল কমিশন’। যৌন নিপীড়নের শিকার একজন জানিয়েছে, সে তার ক্যাথলিক খ্রিস্টান ব্রাদার শিক্ষকের কাছে তার ক্লাসরুমেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর ওই সময় ক্লাসরুমে থাকা বাকি শিক্ষার্থীদের অন্যদিকে তাকিয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুদের মধ্যে মেয়েদের গড় বয়স সাড়ে ১০ বছর এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে সাড়ে ১১ বছর। অস্ট্রেলিয়া জুড়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক হাজারেরও বেশি ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করা হয়েছে। যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো প্রায় একই রকম।
রয়্যাল কমিশন ২০১৩ সালে যৌন নিপীড়নের শিকার কয়েক হাজার ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে। কমিশন পুরো অস্ট্রেলিয়াজুড়ে শিশু যৌন নিপীড়নের বিষয়ে চার্চ, এতিমখানা, স্পোর্টিং ক্লাব, তরুণ গ্রুপ এবং স্কুলগুলোতেও শুনানি করে। অ্যানথনি এবং ক্রিসি ফস্টার এর দুই মেয়ে ক্যাথলিক চার্চে যাজকদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। তার মতে চার্চগুলোতে এরকম অপরাধী লুকিয়ে আছে।
ফ্রান্সিস সুলিভান রয়াল কমিশনকে বলেছেন, “শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের যে সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে তা ভয়াবহ, পীড়াদায়ক এবং কোনভাবেই এটি সমর্থন করা যায় না”।মি: সুলিভানের মন্তব্য “এসব ঘটনায় ক্যাথলিক হিসেবে লজ্জায় আমাদের মাথা হেট হয়ে গেছে”। খবরঃবিবিসি