ফেসবুকে আসক্তির কারনে স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যা করলেন স্বামী

অনলাইন ডেস্কঃবিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

ফেসবুকে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনের নানাদিক সবার সামনে প্রকাশ করে দেওয়ার কারনে স্ত্রীকে খুন করে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন ভারতের পুণে শহরের বাসিন্দা এক যুবক ।

পুণে শহরের পুলিশ বলছে তারা একটি বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে ওই দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ বলছে ৩৪ বছরের রাকেশ গাঙগুর্দে ২৮ বছর বয়সী স্ত্রী সোনালীকে হত্যা করে নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

Facebook

মৃতদেহের সাথে পাওয়া সুইসাইড নোটে রাকেশ লিখেছেন যে তাঁদের দাম্পত্য জীবনের অতি ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে দিতেন তাঁর স্ত্রী। এ নিয়ে অনেকবার সতর্ক করলেও কথা শোনেন নি সোনালী, সে জন্যই এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হল।

ভার্চুয়াল জগতে নিজের জীবনের সব তথ্যই প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে, কেউ আর ব্যক্তিগত – অপ্রকাশিতব্য কিছু রাখছে না । মানুষ যাতে নিজেরাই চিন্তাভাবনা করে, সেন্সর করে পোস্ট বা কমেন্ট দেন – সে ব্যাপারে পুলিশ নিয়মিত প্রচারও চালাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও এমন ঘটনা হয়ে গেল।

মি. গাঙগুর্দে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার আগে সুইসাইড নোটে যা লিখে গেছেন, সেটাই স্ত্রীকে হত্যার মূল কারণ না কি এর পেছনে অন্য কিছু আছে, তা পুলিশ এখনও তদন্ত করে দেখছে। তবে পুলিশ এটা জানতে পেরেছে যে সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট নিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে  নিয়মিত ঝগড়া হত।

সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করার একটা সীমা থাকা উচিত। আমাদের বন্ধু নির্বাচন থেকে শুরু করে ছবি পোস্ট করা – সব বিষয়েই সচেতন থাকা উচিত । কতটা আমি প্রকাশ করব, কোন ছবি কোন বন্ধুদের জন্য দেব, সেটা একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু ঠিক করে ফেলা যায়। আসলে নিজে একটু সচেতন থাকলেই যতটা পরিসরের মধ্যে আমি থাকতে চাই, তার মধ্যেই কিন্তু থাকা যায়। আমরা তো অনেক সময়ে হুজুগে অনেক কিছু করে ফেলি, খেয়াল রাখি না কী করছি। এ কথাগুলি বলেছেন একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী।

Facebook1

দাম্পত্য জীবনের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বা যেখানেই যাচ্ছেন, যা করছেন, যা খাচ্ছেন – এ সব ফেসবুকে সবার সামনে প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে। আর এটাকে নার্সিসিজম বলা হয়। এটা এমন এক মানসিকতা, যেখানে নিজেকে জাহির করা, নিজের সব কিছু ভাল বলে মনে করা, আর সেগুলো সবাইকে দেখিয়ে বাহবা পাওয়ার চেষ্টা করে মানুষ। সেই মানসিকতা থেকেই যেমন ঝুঁকি নিয়ে মানুষ সেলফি তুলে পোস্ট করে, তেমনই সব ব্যক্তিগত কথাও প্রকাশ করে দেয় ভার্চুয়াল বন্ধুদের কাছ থেকে লাইকের মাধ্যমে অনুপ্রেরণা পাওয়ার আশায়। এ কথাগুলি বলেছেন একজন মনোবিজ্ঞানী।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত সত্যিকারের আত্মীয়-বন্ধুদের বদলে সামাজিক মাধ্যমের বন্ধুদের কাছ থেকে লাইকের ওপরে ভরসাতেই বেঁচে থাকার এই নতুন নেশার কবলে পড়ছেন বহু মানুষ। খবরঃবিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *