বুস্টার ডোজ করোনা টিকা পাওয়ার বয়স কমিয়ে আনা হয়েছে। এখন থেকে ৪০ বছর হলেই বুস্টার ডোজ টিকা পাবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন। তিনি আজ মহাখালী বিসিপিএস অডিটোরিয়াম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এর আগে বুস্টার ডোজ পাওয়ার সর্বনিন্ম বয়স ছিল ৫০ বছর। তারও আগে এই সীমা ছিল ৬০ বছর। জাহিদ মালেক জানান, বুস্টার ডোজ নেওয়ার আশানুরুপ সারা পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের হাতে ৯ কোটি টিকা রয়েছে। তাই বুস্টার ডোজ নেওয়ার বয়স কমিয়ে ৪০ করা হল।
(ফাইল ফটো)
উল্লেখ্য ইতিমধ্য যারা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় থেকে ৬ মাস পার হয়েছে তারাই বুস্টার ডোজ পাচ্ছেন। বুস্টার ডোজ পাওয়ার জন্য নতুন করে নিবন্ধনের প্রয়োজন নাই। আগের নিবন্ধনেই মোবাইলে ম্যাসেজ আসবে।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ২৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর নতুন সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ড ছিল ২৩১। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছে আরও ১৫১৯২ জন। । এই নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু ও আক্রান্ত যথাক্রমে ১৯৫২১ জন ও ১১৭৯৮২৭ জন। একদিনে পরীক্ষা অনুযায়ী সনাক্তের হার ২৯.৮২ শতাংশ। মোট পরীক্ষা বিবেচনায় সনাক্তের হার ১৫.৭২ শতাংশ। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছেন আরও ১১০৫২ জন। এই নিয়ে মোট সুস্থ্য হয়েছেন ১০০৯৯৭৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৬৩৯টি ল্যাবে মোট ৫০৯৫২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় যে ২৪৭ জন মারা গেছেন তার মধ্য ১৪১ জন পুরুষ ও ১০৬ জন নারী রয়েছে। মৃতদের মধ্য ২২১ জন হাসপাতালে ও ২৬ জন বাসায় মারা গেছেন। এদের মধ্যে ১৩৭ জনের বয়স ষাটোর্ধ। মৃতদের মধ্য ঢাকা বিভাগের রয়েছে ৭২ জন, রাজশাহী বিভাগের ২১ জন, খুলনা বিভাগে ৪৬ জন, চট্রগ্রাম বিভাগে ৬১ জন, রংপুর বিভাগে ১৬ জন, বরিশালে ১২ জন, সিলেট বিভাগে ১৪ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন।
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশ ইতালী, ফ্রান্স ও স্পেন অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে। এই কঠিন সময়ে ওই সমস্ত দেশে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের তারা তাড়িয়ে দিচ্ছে না। ট্রাম্পের আমরা সমালোচনা করি, আমেরিকা কিংবা ইতালীর সমালোচনা করি। তারাই এই কঠিন সময়ে অবৈধ অভিবাসীদের সে সমস্ত দেশ থেকে বের করে না দিয়ে বরং বৈধ করে নেওয়ার চিন্তা করছে। এই কঠিন সময়েও ইইউরোপে অভিবাসন লাভের আশায় তিউনিশিয়া থেকে ১২৮ জন বংলাদেশীসহ প্রায় ২ হাজারের অধিক মানুষ ইতালীতে ঢুকে পড়েছে নৌপথে। যুক্তরাজ্যেও প্রায় লক্ষাধিক বাংলাদেশী অবৈধভাবে বসবাস করছে। কিন্তু দেশটি অবৈধ বাংলাদেশীদের সে দেশ থেকে বাহির করে দেওয়ার চিন্তা করছে না। মনে হয় তারা বুঝে গেছে কেন করোনা ভাইরাসের আভির্বাব হয়েছে। আর তাই তারা মানুষকে মানুষ হিসাবে গন্য করে এই কঠিন সময়ে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।
আর আমাদের মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ কুয়েত ও সৌদি আরব সে সমস্ত দেশে থাকা অবৈধ শ্রমিকদের জোড় করে সেদেশ থেকে বাহির করে দিচ্ছে। শুধু তাই নই তারা বাংলাদেশ সরকারকে এই সমস্ত শ্রমিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে চাপ ও হুমকিও দিয়ে আসছে। কুয়েতে থাকা ৪ হাজারের অধিক বাংলাদেশী অবৈধ শ্রমিক ফিরিয়ে না আনলে দেশটি বাংলাদেশকে ব্লেকলিস্টে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে আর জনশক্তি নিবে না ও যারা ইতিমধ্য কুয়েতে বৈধভাবে কর্মরত আছে তাদের ভিসা আর নবায়ন না করারও হুমকি দিয়েছে দেশটি। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বনীতি হল যে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। কিন্তু দেশ দুটি নানা কারনে অবৈধ হয়ে যাওয়া শ্রমিদের দেশে চলে যেতে বাধ্য করছে। মাত্র কয়েক হাজার শ্রমিকের বরনপোষনের ব্যবস্থা করতেও তারা অনিহা প্রকাশ করে যাচ্ছে। এই সমস্ত শ্রমিকরা খালি হাতে দেশে ফিরে আসলে দেখা দিবে নানা পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যা। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশগুলি এখনো বুঝতে পারে নাই কেন করোনার আগমন ঘটেছে।
২৭ ও ২৮শে এপ্রিল ২৪৬ জন কুয়েতের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন। অবৈধ হয়ে যাওয়ায় কুয়েত থেকে বুধবার ২৯৯ জন দেশে ফিরে এসেছেন সাধারন ক্ষমার আওতায়। ১৬, ১৭ , ২১ ও ২২ মে আরও এক হাজার ৮০০ প্রবাসীকে দেশে পাঠানো হবে বলে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন।
এই প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হল নরসিংদী জেলায়। নরসিংদী সিভিল সার্জন অফিস এই খবর নিশ্চিত করেছে। মৃত ব্যক্তির বাড়ি নরসিংদী জেলা সদরের বাঘদীতে বলে জানা গেছে। তবে এখনো তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায় নাই। এ ব্যবপারে নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আরএমও এর সাথে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন, ২/৩ দিন পূর্বে জেলা হাসপাতাল থেকে ২/৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল সম্ভবত তাদের মধ্য একজন মৃত্যুবরন করেছে। এখন পর্যন্ত এই ব্যপারে বিস্তারিত তথ্য জেলা সিভিল সার্জনের অফিস ও জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয় নাই বলে উভয় অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ঠিক কতজনের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ও কতজন আক্রান্ত পাওয়া গেছে তা এখনো সিভিল সার্জন অফিসে পৌছে নাই বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
শান্তিপূর্ণভাবে দুই সিটির ভোট গ্রহন শেষ হয়ে গেল। এই ভোটে ঢাকা দক্ষিনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস বিপুল ভোটে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইসরাক হোসেনকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাপসের প্রাপ্ত ভোট ৪২৪৫৯৫ ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ইসরাকের প্রাপ্ত ভোট ২৩৬৫১২। ফলাফলে দেখা যায় ১৮৮০৮৩ ভোট বেশী পেয়ে ফজলে নুর তাপস ঢাকা দক্ষিনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে ঢাকা উত্তরের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের আতিকুল ইসলাম। আতিকুলের প্রাপ্ত ভোট ৪৪৭২২১ ও তাবিথের প্রাপ্ত ভোট ২৬৪১৬১। ফলাফলে দেখা যায় আতিকুল তাবিথ আউয়াল থেকে ১৮৩০৬০ বেশী পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে কাউন্সিলর পদেও ৯০% ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বিএনপি প্রার্থীদের সূচনীয় পরাজয়ের কারন বিশ্লেষনে দেখা যায়-
১। তফসিল ঘোষনার আগে থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে নানা নেতিবাচক কথাবার্তা প্রচার হতে থাকে। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ট হবে না এটা প্রমান করার জন্যই তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফখরুলের এ কথার অর্থ দাঁড়ায় আওয়ামীলীগ যেভাবেই হউক নির্বাচনে জিতে যাবে। এতে বিএনপির ভোটারদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। ফলশ্রুতিতে তারা ভোট দিতে কম আসে।
২। ইভিএম নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ড থেকে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রচারনা চালানো হয়। যাতে বিএনপির ভোটাররা ভোট দিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। তাদের মধ্য ইভিএম ভীতি কাজ করে। তাই বিএনপির সমর্থিত ভোটাররা অনেকেই ভোট দানে বিরত থাকেন।
৩। ইভিএম ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে ঢালাওভাবে নেতিবাচক মিথ্যা প্রচারনা সাধারন ভোটাররা স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। তাই সাধারন ভোটারদের অধিকাংশ বিএনপি প্রার্থীদের ভোট না দিয়ে ব্যপক হারে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট প্রদান করে।
৪। পুরো নির্বাচন জুড়ে বিএনপি ও এর প্রার্থীরা নানা মিথ্যা অভিযোগ দিতে থাকে মিডিয়ায় ও নির্বাচন কমিশনে। এই বিষয়টি সাধারন ভোটাররা ভালভাবে নেয়নি।
৫। দুই সিটিতেই বিএনপি প্রার্থী থেকে আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা অনেক বেশী যোগ্য হওয়ায় ভোটাররা তাদের প্রতিই বেশী সমর্থন জানিয়েছে।
৬। যেহেতু আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আছে, তাই আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা জয়লাভ করলে এলাকায় বেশী উন্নয়ন হবে তাই ভোটাররা আওয়ামীলীগ প্রার্থীকেই বেশী অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
৭। ভোটে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের প্রচার প্রচারনায় খুব একটা দেখা যায় নাই। ফলে কর্মী সমর্থকরা হতাশ ছিলেন ও এই হতাশায় তারা ভোটের প্রচারে উৎসাহ নিয়ে প্রচারনায় অংশ গ্রহন করতে পারেন নাই।
৮। আওয়ামীলীগ সরকার নানা ক্ষেত্রে ব্যপক উন্নয়ন করায় ভোটাররা আওয়ামীলীগ সরকারের প্রতিই বেশী আস্থা রাখছেন।
৯। দুর্নীতিসহ নানা ক্ষেত্রে অনেক প্রশংসনীয় কাজ করায় জনগন শেখ হাসিনার প্রতিই বেশী আস্থা রাখছেন। যা দুই সিটির নির্বাচনে প্রতিফলিত হয়েছে।
১০। মির্জা ফখরুল ইসলামের নিলজ্জ লাগামহীন মিথ্যাচার সাধারন ভোটাররা ভালভাবে নেয়নি। আওয়ামীলীগ সরকারের সারাদেশে দেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন নিয়েও ফখরুলসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের ধারাবাহিক নেতিবাচক কথাবার্তা মানুষ সাধারনভাবে নেয়নি।
সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয় দুই সিটির ভোট গ্রহন। ভোট গ্রহনকালে দুই সিটির বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে ভোটার উপস্থিতি কম পাওয়া যায়। কোথাও কোন অনিয়ম চোখে পড়েনি। প্রায় সকল কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে অনিয়মের নানা ধরনের অভিযোগ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
সিটি নির্বাচনে যারা ভোট প্রদান করেছেন তাদের অনেকের সাথে কথা হয়েছে। প্রায় সকলেই বলেছেন ইভিএমের মাধ্যমে অতি অল্প সময়েই ভোট দিতে পেরেছেন তারা। ইভিএমে ভোট কারচুপির সুযোগ একেবারে নাই বললেই চলে। আর এবারই বড় কোন নির্বাচনের সকল কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।
বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহন শেষ হবার পর কেন্দ্র ভিত্তিক আংশিক ফলাফল আসতে থাকে। প্রাথমিকভাবে আসা ফলাফলে দেখা যায় দুই সিটিতেই আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বিপুল ভোটে এগিয়ে আছেন। সময়ের সাথে সাথে আরো কেন্দ্রের ফলাফল আসতে থাকলে এই ব্যবধান বাড়তে থাকে। আর এই সময় বিএনপি নেতৃত্ব বুঝতে পারে যে মেয়র পদে তাদের দুই প্রার্থীই ব্যপক ভোটে হেরে যাচ্ছেন। আর তখন থেকেই তারা নানা ধরনের অলিক অভিযোগ করতে থাকেন ভোট গ্রহন, ইভিএম ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। রাত আটটার সময় তারা ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যন করে রবিবার রাজধানীতে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডাকেন। বিএনপির হরতাল ঘোষনার পর পরিবহন মালিকদের পক্ষ থেকে যানবাহন চলাচল অব্যহত রাখার ঘোষনা দেওয়া হয়েছে।
পহেলা ফেব্রুয়ারী দুই সিটির ভোট অনুষ্ঠানের দিন। নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও অভাবনীয় শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচারনা। রাত পোহালেই শুরু হবে ভোট যুদ্ধ। রাজধানীবাসী তাদের দুই নগর পিতা নির্বাচন করবে এই ভোটের মধ্য দিয়ে। তফসিল ঘোষনার পর এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মধ্য তেমন কোন সহিংসতা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে প্রচারনা।
তফসিল ঘোষনার পর থেকেই বিএনপি ও এর সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে নানা ধরনের অভিযোগ আসতে থাকে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের প্রতিও তারা অনাস্থা জ্ঞাপন করে। প্রকৃতপক্ষে এই নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় অভিযোগ গ্রহন করে ব্যবস্থা নেওয়ার মত তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি যাতে করে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিতে পারে। এই অভিযোগগুলির সবই ছিল গতানুগতিক। এর বাস্তব ভিত্তি ছিল খুবই দুর্বল। এবার দুই সিটির পুরো নির্বাচনই হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেসিন ইভিএমের মাধ্যমে। এটি ভোট গ্রহনের জন্য একটি আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত ভোট গ্রহন ও গননা করে দ্রুত ফলাফল ঘোষনা করা যায়। বিএনপির পক্ষ থেকে এই ইভিএম নিয়েও আপত্তি জানানো হয়। আসলে নির্বাচনে যদি বিএনপি হেরে যায় তাহলে বলা হবে ইভিএমের মধ্যমে ভোট কারচুপি করে বিএনপি প্রার্থীকে হারানো হয়েছে। তাই আগে থেকেই তারা ইভিএমের বিপক্ষে কথা বলছে।
এই নির্বাচনে সরকারের নানামূখী ব্যপক উন্নয়নের কারনে সরকার তথা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই জয়লাভ করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া আওয়ামীলীগ যেহেতু সরকারে আছে তাই এর সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে দুই সিটিতে ব্যপক উন্নয়ন সাধন করতে পারবে। তাই ভোটাররা স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষেই বেশী থাকবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে সুষ্ঠ নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থীরাই জয়লাভ করবে। এর অর্থ এমনটি দাঁড়ায় যে, বিএনপি প্রার্থীরা হারবে এবং তখন নির্বাচনও সুষ্ঠ হবে না।
ইতিমধ্য দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে জয়ের জরিপে বিএনপির মনোবল ভেঙ্গে গেছে বলে মনে হচ্ছে। সম্প্রতি দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে সজিব ওয়াজেদ জয়ের করা এক জরিপে দেখা গেছে আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। ফেসবুকে জয় এই জরিপের বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। এর আগেও বেশ কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনের আগে জরিপ চালিয়ে যে ফলাফল পেয়েছিলেন সজিব ওয়াজেদ জয় তা বাস্তবেও মিলে গিয়েছিল। তাই নির্ভরযোগ্য এই জরিপটিও নির্ভুল হবে এই ধারনা করা যায়। আর জরিপের ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই চিন্তিত হয়ে পড়েছে বিএনপি প্রার্থীরা ও বিএনপি। তবে বাস্তব ফলাফল দেখতে আরো ২০ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
শনিবার রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিন সিটির ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে আসছে। রাজধানীর অলিগলিতে চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। রাজপথ ছেয়ে গেছে নানা ধরনের পোষ্টারে। অবস্থা এমনই যে পোষ্টারের কারনে অলিগলির রাস্তার উপরে ছাদের মত অবস্থ তৈরী হয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখা যায় না। সকল দলের প্রার্থীদের পোষ্টার পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে। এবার প্রচারনায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে প্রচারনায় নানা ধরনের গান। বিভিন্ন গানের সুর নকল করে এই সমস্ত ডিজিটাল প্রচারনার গান বানানো হয়েছে। শহরের অলিগলিতে সকাল থেকে রাত অবধি বাজছে প্রচারনার গান।
নজিরবিহীন শান্তিপূর্ণভাবে চলছে এই প্রচারনার কাজ। নির্বাচনী প্রচারনায় এমন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিগত ৩০ বছরের নির্বাচনগুলিতে দেখা যায়নি। এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন না। এমনটি এবারই দেখা যাচ্ছে। দু-একটি তুচ্ছ ঘটনা বাদ দিলে পরিবেশ অত্যান্ত শান্তিপূর্ণই আছে। নির্বাচনে এমন শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান অত্যান্ত বিরল ঘটনা আমাদের নির্বাচনগুলিতে। কোন দলই অপর দল কিংবা প্রার্থীর বিরুদ্ধে তেমন কোন গুরুতর অভিযোগ দায়ের করতে পারছে নির্বাচন কমিশনে। যদিও বিএনপি প্রার্থীদের পক্ষ থেকে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ জানানো হচ্ছে নির্বাচন কমিশনে। এটি আসলে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে চাপে রাখার কৌশল বলেই অনেকে মনে করছেন।
দুই সিটির সম্পূর্ণ নির্বাচনই এবার অনুষ্টিত হবে ইভিএমের মাধ্যমে। ইভিএম আধুনিক ভোটিং মেশিন। ইভিএম নিয়ে বিএনপি বরাবরই আপত্তি জানিয়ে আসছে। এটিও নির্বাচন কমিশনকে চাপে রাখার কৌশল বলে অনেকে মনে করছেন। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থীরা যদি নির্বাচনে হেরে যায় তাহলে ইভিএম এর মাধ্যমে ডিজিটাল কারচুপির অভিযোগ আনবে। তাই আগে থেকেই এর ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে বিএনপি। তবে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আনলে মনে হয় শনিবার দুই সিটির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ হবে। ভোটাররা এই নির্বাচনে অবাধে ভোট দিতে পারবে।
দুই সিটির নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে লড়াইটা আতিকুল ইসলাম ও তাবিথ আওয়াল এবং ফজলে নুর তাপস ও ইসরাক হোসেনের মধ্যই সীমাবদ্ধ থাকবে। দুই সিটির ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে শনিবার তাদের নগর পিতা নির্বাচন করবেন। কারা হবেন উত্তর ও দক্ষিন সিটির নগর পিতা তা শনিবার রাতেই জানা যাবে।
রাজধানীর কুর্মিটুলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের ছাত্রী ধর্ষণ ঘটনায় ঢাকসুর সাবেক ভিপি মান্না ভাইরা জড়িত! ঢাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না ও বর্তমান ভিপি নুরুল হক নুরের কথায় এমন ধারনাই পাওয়া যায়। ঢাকসুর সাবেক ভিপি মান্না বলেন,’এমন একটি দুর্বল লোক একা একটি মেয়েকে ধর্ষণ করতে পারে’? ঢাকসুর বর্তমান ভিপিও একই সুরে কথা বলছেন। তাদের কথা থেকে মনে হয় এই মজনু ধর্ষণ ঘটনার সাথে জড়িত না। এর অর্থ তারা জানেন কে বা কারা মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। তাতে মনে হয় এই চক্রই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই দুই জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলে এতে অন্য কেউ জড়িত কি না তা বেরিয়ে আসবে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এটি মান্না ভাইদের কাজ হতে পারে। এই বিষয়টকে ভালভাবে সরকারের বিবেচনায় আনা উচিৎ।
বাংলাদেশে প্রতিদিনই ২/৪টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ২০ কোটি জনসংখ্যার মানুষের দেশে এটি সংখ্যার দিক থেকে অনেক উন্নত দেশের সাথে তুলনা করলে এটি খুব বেশী নয়। পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নাই যেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে না। এমন কি সৌদি আরবেও তা ঘটে থাকে। তবে বাংলাদেশে আমরা কোন ধর্ষণ আশা করি না। এটি আমাদের সমাজ থেকে একেবারে নির্মূল হোক তা আমরা চাই। কিন্তু এটি নিয়ে রাজনীতি একেবারেই কাম্য নয়।
ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর সন্নিহীত স্থান সমুহে প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে। ঘটনার দিন রাতেই ঢাবিতে রাত আড়াইটায় ও সাড়ে ৩টায় প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। ধর্ষনে জড়িতকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি উঠে ঢাবি ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশিল বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। পরদিন সোমবার বাম গড়নার একদল ছাত্র শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এই বিক্ষোভে ঢাবি ভিপি অসুস্থ্য নুরুল হক নুর উপস্থিত হয়ে তীর্যক বক্তব্য প্রদান করে। এর আগে তিনি ঢাকা মেডিকেল থেকে ছাড়া পেয়ে বেশ কয়েকদিন আত্নগোপনে ছিলেন। নুরসহ কতিপয় সরকার বিরোধী ছাত্র সংগঠন এটিকে ইস্যু করে আবার নতুন করে ঢাবিকে অশান্ত করার চেষ্টা করে। সারাদেশে এই আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সোমবার সারাদিন এই ঘটনার সাথে সরকারী দল আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ কিংবা যুবলীগকে জড়িত করা যায় কি না সে চেষ্টা করা হয়। অবশেষে তা সম্ভব না হলে হতাশ হয়ে পড়ে ঢাকসু ভিপি নুর ও তার অনুসারীরা। ফলে আন্দোলনের ইস্যু ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে হতাশ হন নুরসহ সরকার বিরোধী পক্ষ।
আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত সময়ে এই ধর্ষণ ঘটনার সাথে জড়িত মজনুকে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে। মজনু এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। একাই সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে র্যাবকে জানায়। এর আগে ধর্ষিত ছাত্রী ধর্ষকের শারিরীক গঠন ও বয়সের বর্ণনা দিয়েছিল আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। সেই সূত্র ধরেই ভবঘুরে মজনুকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সেই মজনুর ছবি দেখালে সে নিশ্চিত করে যে এই লোকটিই তাকে ধর্ষণ করেছে। মজনু এখন পুলিশি রিমান্ডে আছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করার চেষ্টা করেছিল, যারা এর সূত্র ধরে সারা দেশে সরকার বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা যারপরনাই হতাশ হয়েছে। আর এরাই বলছে মজনুকে জজ মিয়া সাজানো হয়েছে। এর অর্থ হল তারা জানেন মজনু এই ঘটনার সাথে জড়িত না। তা হলে মান্না ভাই কিংবা নুরেরা জানেন আসলে কে ধর্ষণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে মনে হয় মান্না ভাইরাই সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
আওয়ামী যুবলীগের বিদায়ী সাধারন সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেছেন, গুটিকয়েক নেতার জন্য যুবলীগের বদনাম হয়। যুবলীগের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী স্বার্থহীনভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নির্দেশে অবিরাম কাজ করে চলেছেন। তারা বঙ্গ বন্ধু ও তার মেয়ে শেখ হাসিনাকে ভালভেসে জাতির জনকের স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে সামনেরদিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আজ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী ময়দানে যুবলীগের ৭ম জাতীয় সম্মেলনে এইসব কথা বলেন।
এর আগে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের এই সম্মেলন উদ্ভোধন করেন। হারুন অর রশিদ বলেন, যুবলীগের কতিপয় নেতা লোভ লালসার কারনে ক্যাসিনোতে জড়িয়ে পড়লে সারা দেশব্যপী এর সমালোচনা চলে। মঞ্চে শেখ হাসিনার উপস্থিতে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) আমাদেরকে শিখিয়েছেন, রাজনীতি নেওয়ার জন্য নয়, রাজনীতি দেওয়ার জন্য, যা যুবলীগের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী পালন করে আসছে।’
তিনি আরো বলেন, আমি আশা করছি এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যে নতুন কমিটি গঠিত হবে তা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে আরো সামনেরদিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। উল্লেখ্য ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়লে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর প্রেসিডিয়াম সদস্য চয়ন ইসলামকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষনা করা হয়। পরে চয়ন ইসলামকে আহবায়ক ও হারুন অর রশিদকে সদস্য সচিব করে যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে। পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে এই প্রত্যয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সদ্য সরিয়ে দেওয়া মহাসসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারকে। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বানিজ্য করার অভিযোগে সাবেক মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারকে সরিয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে নতুন মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা প্রধান করা হয়েছিল রুহুল আমীন হাওলাদারকে। নতুন মহাসচিব নির্বাচনের পর কে হবেন দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রদানের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তা নিয়ে বেশ আলোচনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। আজকে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে এই ক্ষমতা প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই জল্পনার অবসান হল।
নরসিংদীর বেলাবতে বাস লেগুনা মুখোমুখি সংঘর্ষে ৯ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে আটটার সময় ঢাকা সিলেট মহাসড়কের বেলাবোর দড়িপাড়া নামক স্থানে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
মরজাল থেকে যাত্রী বোঝাই করে একটি লেগুনা ভৈরব যাচ্ছিল। এই সময় ভৈরব থেকে ছেড়ে আসা ঢাকার মহাখালীগামী একটি বাসের সাথে লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এই হতাহতের ঘটনাটি ঘটে। নিহতদের কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- আবুল হোসেন (৫৫), আবদুল মিয়া (২৪), মোবারক হোসেন (১৮), সুজন মিয়া (৩০) ও তার স্ত্রী (২৩)।
মালয়েশিয়ান মালিন্ডো এয়ার লাইনসের একটি বিমান নেপালের ত্রিভূবন বিমান বন্দরে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে। বিমানটিতে ১৩৯ জন যাত্রী ছিল। তবে যাত্রীরা সবাই অক্ষত আছে। মালিন্ডো এয়ার লাইনসের এই বিমানটি ১৩৯ জন যাত্রী নিয়ে মালয়েশিয়া যাবার কথা ছিল।
উড্ডয়নের সময় বিমানটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিলে পাইলটরা বিমানটি উড্ডয়ন থেকে বিরত রাখতে গেলে বিমানটি রানওয়ে থেকে অদুরে ছিটকে পড়ে। বিমানটির চাকা মাটিতে ডেবে যায়। পরে বিমানটকে রানওয়েতে নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনার পর ত্রিভূবন বিমান বন্দরে সকল ধরনের বিমান উঠা নামা বন্ধ হয়ে যায়।
মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশের গুলিতে ৭ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে। তবে এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আর তাতে সংখ্যা গরিষ্ট বুদ্ধরাই এবার পুলিশের নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। মঙ্গলবার মারাউক ইউয়ে একটি প্রতিবাদ সভায় অন্তত পাঁচ হাজার বৌদ্ধ যোগ দিয়েছিলেন। শহরটি রাখাইনে হলেও এতদিন সেনা নির্যাতনের কবল থেকে মুক্ত ছিল।
মারাউক ইউয়ে প্রাচীন আরাকান রাজত্বের পতন উপলক্ষে বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল। প্রাচীন আরাকান সভ্যতায় মারাউক ইউ-ই ছিল রাজধানী। প্রায় দুইশ বছর আগে বার্মার সেনাবাহিনীর হাতে এই রাজত্বের পতন ঘটে। আর সেই ইতিহাস মনে রাখতে প্রতি বছরই অনুষ্ঠান হয় সেখানে। স্থানীয় মানুষ যোগ দেন এই অনুষ্ঠানে। তবে এ বছর মিয়ানমার সরকার এখানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি না দেওয়ায় প্রায় হাজার পাচেক স্থানীয় বুদ্ধ সরকারী অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ প্রথমে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীরা সরকারী অফিস ভাংচুর ও লুটপাট চালালে পুলিশ গুলি চালিয়ে ৭ জন বুদ্ধকে হত্যা করে। এ ছাড়াও গুলিতে আরও ১৩ জন আহত হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডের নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষনা করেছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। একই সাথে নির্বাচনের তফসিল কেন বেআইনী ঘোষনা করা হবে না তা জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেছে।
বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের ডিভিশন বেঞ্চ আজ বুধবার পৃথক দুটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হওয়া রাজধানীর ভাটারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম গতকাল সকালে রিট আবেদন দুটি দায়ের করেন। রিটে বিবাদী করা হয় নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের। উল্লেখ্য আইনী জটিলতার কারনে এর আগেও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আটকে যায় বেশ কয়েকবার। আর সে জন্যই সাদেক হোসেন খোকা ৯ বছর ঢাকার মেয়র ছিলেন।
আবারও ভয়ংকর রুপ ধারন করেছে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মাউন্ট আগুয়াং আগ্নেয়গিরি। জ্বালামুখ দিয়ে অনবরত বেড় হচ্ছে কালো ধোঁয়া। বাতাসে উড়ে আসছে ছাই। যা বিমান বন্দরেও ভেসে আসছে। তাই বালি বিমান বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ৪৪৫টি বিমানের উঠানামা। যার ফলে ৬০ হাজার যাত্রী আটকা পড়েছেন বালিতে।
আগ্নেয়গিরির ১২ কিলোমিটারের মধ্য বসবাসরত ১২০০০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই আগ্নেগিরির জ্বালা মুখ মাউন্ট আগুয়াং পাহাড়ের ৯৮০০ ফুট উচ্চতায় রয়েছে।
এর আগে ১৯৬৩ সালে এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নোৎপাত হয়েছিল। তাতে প্রায় ১০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল ও গ্রামের পর গ্রাম ছাই হয়ে গিয়েছিল।
নবী নামের ১২ বছরের এক রোহিঙ্গা কিশোর টেকনাফে আসবে বলে মনোস্থির করে। তাদের গ্রামটি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আগেই পুড়িয়ে দিয়েছে। তারপর তার পরিবার সীমান্তবর্তী অন্য একটি স্থানে অনাহারে/অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। দুবেলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্ষেতে পারবে এ আশায় সে টেকনাফে আসবে। বাবা-মাকে সে রাজি করায়।
তারপর ২৫ জন কিশোরের একটি দল অভিযানে বেড়িয়ে পড়ে। এরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে একে অপরের কোমরের সাথে রশি বাধে। তার পর শুরু সাতার কাটা। কিন্তু নবী সাতার জানে না। সে জন্য ভেসে থাকার জন্য সে একটা তেলের ড্রাম ব্যবহার করে। অবশেষে অন্যদের সাথে সেও নাফ নদী পাড়ি দিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে আসে।
পাকিস্তান দূতাবাসের ফেইজবুক পাতায় একটি বিডিও পোষ্টে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে প্রচার করা হয়। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নজরে আসলে পাকিস্তানের দূতাবাসের হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে তলব করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে পাকিস্তানের হাইকমিশনার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে উপস্থিত হয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
মানবাধীকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, মায়ানমার সীমান্তে মানুষ মারার মাইন পেতে রেখেছে। তারা তার প্রমান পেয়েছেন। এই মাইনগুলি এন্টি ট্যাংক মাইন নয়। এই মানুষ মারার মাইন জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী নিশিদ্ধ। মাানুষের পায়ের চাপ পড়লেই মাটিতে পেতে রাখা এ মাইন বিস্ফোরিত হয়। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরো বলেছে, মিয়ানমার সীমান্তে পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরিত হয়ে গত সপ্তাহে কমপক্ষে তিন জন বেসামরিক লোক আহত হয়েছে এবং একজন লোক নিহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে এখন প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম মায়ানমার বাহিনীর বর্বর হামলার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। মিয়ানমারে সৈন্যরা যে মাইন পাতছে সে দৃশ্যো তারা দেখেছে বলে জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
কারা কর্তৃপক্ষ কারাবিধি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মুফতি হান্নানের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ করার পর গত মঙ্গলবার শেষ দেখা করার জন্য স্বজনদের কাছে বার্তা পাঠায়। আজ সকালে মুফতি হান্নানের স্ত্রীসহ পরিবারের ৪ সদস্য তার সঙ্গে শেষ দেখা করেছেন। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি আছেন জঙ্গি হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি হান্নান।
কারা কর্তৃপক্ষের খবর পেয়ে আজ সকালে মুফতি হান্নানের স্ত্রী রুমা আক্তার, দুই মেয়ে নাজনীন ও নিশাত এবং বড় ভাই অলিউজ্জামান ভোরে কারাগারে আসেন ও বিধি অনুযায়ী তারা হান্নানের সঙ্গে দেখা করেছেন। এদিকে কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপারের মাধ্যমে জানা যায় তাদের ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কারাগারে জল্লাদ ও ফাঁসির মঞ্চ সবকিছুই প্রস্তুত আছে। ফাঁসির মহড়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। আজই ফাসি কার্যকর হতে পারে।