১২ বছর পর মা-বাবার কাছে ফিরে আসলো রিফাত

দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র রিফাত কখনো ট্রেন দেখেনি। ট্রেন দেখা ও ট্রেনে ভ্রমন করার তার খুব ইচ্ছা। তাই একদিন ট্রেন দেখার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি স্টেশনে যায় শিশু রিফাত। স্টেশনে একটি ট্রেন থামার পর তাতে উঠে পড়ে সে। ট্রেনের এটা সেটা দেখতে দেখতে ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে চলে যায়। সে আর নামতে পারেনি। এভাবে সে হারিয়ে যায়, হারিয়ে যাওয়ার প্রথমদিকে সে রাজশাহীতে বিভিন্ন বাড়িতে রাখালের কাজ করত। লেখাপড়া করার ইচ্ছা থাকলেও তা আর হয়ে উঠেনি। এভাবেই কেটে গেল রিফাতের ৭টি বছর। ঘটনাটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের।

তারপর রিফাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ চলে যায়। আর সেখানে এক প্রবাসীর মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে তাকে যেতে হয় রাজশাহী কারাগারে। আর এই কারাগার থেকে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী বায়া কিশোর সংশোধনাগারের এতিমখানায়। এভাবে কেটে যায় তার জীবনের আরও ৫টি বছর। সেখানকার এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে মা-বাবাকে খোঁজে পাওয়ার আশায় ঢাকায় এসে অংশ নেয় আর জে কিবরিয়ার জীবন গল্পের অনুষ্ঠানে। গত ২৮ডিসেম্বর ভিডিওটি প্রচার হলে দুদিনের মধ্যেই পরিবারের খোঁজ পায় রিফাত।

অবশেষে সব রকমের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবা মায়ের কাছে ফিরে আসে রিফাত। দুই মেয়ে আর এক ছেলের সংসারে বড় সন্তান রিফাতকে ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে গালিমপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন ও রুপালী বেগম আল্লাহ তাআলার কাছে শুকুরিয়া আদায় করছেন। ১২ বছর পর ফিরে আসা রিফাতকে দেখতে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে এলাকাবাসীদের ভিড় লেগেই আছে। আর সহপাঠি্রাও ভিড় করছেন, রিফাতকে ফিরে পেয়ে তারাও বেজায় খুশী।সূত্রঃ ইত্তেফাক।