চার খলিফার অন্যতম শাহজাহান সিরাজ আর নেই

বরেন্য রাজনীতিবিদ ও চার খলিফার অন্যতম শাহজাহান সিরাজ আর বেঁচে নাই। মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তার জীবনাবসান হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। ২০১২ সালে তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে, এর কয়েক বছর পর মাথায়ও ক্যান্সার শনাক্ত হয়। তখন থেকেই তিনি রাজনীতিতে অদৃশ্যমান হয়ে পড়েন। সোমবার তার অবস্থার অবনতি ঘটলে এভার কেয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

১৯৪৩ সালের ১লা মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন শাহজাহান সিরাজ। তার পিতার নাম আব্দুল গণি মিয়া ও মাতা রহিমা বেগম। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্যদিয়ে শাহজাহান সিরাজ ছাত্র-রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সেই সময় তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজের ছাত্র ছিলেন। এরপর তিনি ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র-রাজনীতিতে উঠে আসেন। ১৯৬৪-৬৫ এবং ১৯৬৬-৬৭ দুই মেয়াদে তিনি দুইবার করটিয়া সা’দাত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যত্থানে অংশগ্রহন করেন। এরপর তিনি ১৯৭০-৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ (যার অন্য নাম নিউক্লিয়াস) এর সক্রিয় কর্মী, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা।

শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন অন্যতম ছাত্রনেতা। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৩ বার জাসদের মনোনয়নে এবং ১ বার বিএনপি’র মনোনয়নে সংসদ সদস্য নিবাচিত হন। শাহজাহান সিরাজ ২০০১ সালের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়ার সরকারে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
শাহজাহান সিরাজ মুক্তিযুদ্ধের পর সর্বদলীয় সমাজতান্ত্রিক সরকার গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনে ভূমিকা পালন করেন, যা ছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিরোধী দল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সহকারী সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শাহজাহান সিরাজ। পরবর্তীতে জাসদ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।