যে কারনে মার্কেট খুলতে চাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা

বিশ্বব্যপী করোনা পরিস্থিতিতে ২৬শে মার্চ থেকে দেশে সরকারী ছুটি শুরু হলে রাজধানীসহ দেশের সুপরিচিত মার্কেট ও সপিংমলগুলিও বন্ধ হয়ে যায়। তার কিছুদিন পর থেকেই সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়। এরই মধ্য সরকারী ছুটি কয়েক দফা বাড়ানো হলে সারাদেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র জরুরী সেবাসমূহ ছাড়া দেশের সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানও বন্ধ আছে এখন পর্যন্ত। কিন্তু দেশের অর্থনীতির কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকার ইতিমধ্য কিছু শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করে নেয়। এদিকে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষনা দেয় যে আগামী ১০ই মে থেকে দেশের সপিংমল ও দোকানপাট সীমিত পরিসরে খুলা রাখা যাবে। তবে এর মধ্য অনেক শর্ত রয়েছে। সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মার্কেট ও দোকানপাট খুলা রাখা যাবে। বিকাল ৪টার মধ্য অবশ্যই দোকান বন্ধ করতে হবে। সেই সাথে আরও অনেক শর্ত রয়েছে।

এমতাবস্থায় দোকান মালিক সমিতি ও দোকান মালিকরা দফায় দফায় মিটিং করে। এই অবস্থায় রাজধানীর অনেক মার্কেটই চালু রাখতে চাচ্ছেন না মালিকরা। এর মধ্য বসুন্ধরা সপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেট ও চন্দ্রিমা মার্কেট চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকেরা কিংবা মালিক সমিতি অথবা ব্যবসায়ী সমিতি। আরও বেশ কয়েকটি মার্কেট চালু না করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কেন ব্যবসায়ীরা দোকান চালু করতে চাচ্ছেন না তা জানার জন্য মানুষের মধ্য কৌতুহলের শেষ নাই। যে সমস্ত সম্ভাব্য কারনে মালিকরা দোকান খুলতে চাচ্ছেন না তা নিন্মে দেওয়া হল।

১। ঈদকে সামনে রেখে দোকানে যে পরিমান মালামাল থাকার কথা তা তাদের নাই। আবার এই বেঁধে দেওয়া স্বল্প সময়ের মধ্য নতুন কালেকশন করা সম্ভব নাও হতে পারে। এই অনিশ্চিত অবস্থায় তারা নতুন করে পুজিও খাটাতে চাচ্ছেন না কিংবা অনেকের পর্যাপ্ত তারল্যও নেই। তাই তারা দোকান খুলে নতুন করে আবার বিপদে পড়তে চাচ্ছেন না।

২। মার্কেট খুললেও যে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসবেন তাও নিশ্চিত না। তাই মালিকরা দোকান খুলতে ভরসা পাচ্ছেন না।

৩। যে সমস্ত সেলসম্যানরা দেশের বাড়ি চলে গেছেন তাদের আবার ঢাকায় এনে দোকান চালানো বেশ সমস্যা হতে পারে। তাদের অনেকেই হয়ত নিজের অজান্তেই করোনা ভাইরাস বহন করে থাকতে পারেন। এই বিষয়টি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে মালিকরা হয়ত দোকান চালাতে চাচ্ছেন না। আবার কর্মচারীদের ডেকে এনে গুনতে হবে এদের সাবেক ও বর্তমান বেতনও। এটিও দোকান না খুলতে একটি বড় কারন।

৪। অপরদিকে ক্রেতাদের মাধ্যমে হয়ত নিজেরা সংক্রমিত হওয়ার আশংস্কা আছে। এতে পরিবার পরিজনের মধ্যেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ছাড়া সামনের দিনগুলিতে দেশে করোনা ভাইরাসের কি পরিস্থিতি হয় তাও তারা বিবেচনায় নিয়ে দোকান খুলা না রাখতেই বেশী মনোযোগ দিয়েছেন।

৫। সরকার যে সমস্ত শর্ত দিয়েছে সেগুলি হয়ত মার্কেট কিংবা দোকান মালিকরা রক্ষা করতে পারবেন না। অধিক সংখ্যক ক্রেতা যদি মার্কেটে চলে আসে তাহলে সামাজিক দুরত্ব বাজায় রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। তাই মালিকরা দোকান খুলতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।

এদিকে বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার সীমিত পরিসরে শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট চালু করার অনুমতি দিয়েছে। এখন কেউ শর্ত মেনে দোকান চালু রাখতে পারেন আবার চাইলে নাও রাখতে পারেন। এই সিদ্ধান্ত মালিকরাই নিবে।