করোনা ভাইরাস নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের খবর

বিডি খবর ৩৬৫ ডটকমঃ

মধ্যপ্রাচ্যের বড় দেশ সৌদি আরবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২৯ জন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। একই সময়ে দেশটিতে মৃত্যুবরন করেছে ৭ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪৪৬২ জন ও মোট মৃত্যুবরন করেছে ৫৯ জন। আর আক্রান্তদের মধ্য সুস্থ হয়েছে ৭৬১ জন। শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে ৪০ হাজার জনকে এবং এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭০০০ জন। করোনা ভাইরাস সংক্রমনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ২৪ ঘন্টা কারফিও চলছে। মক্কা ও মদিনাসহ অনেক এলাকা লকডাউন করা হয়েছে বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই। সরকারী নির্দেশে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ ঠেকাতে মসজিদে যেয়ে জামাতে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশটিতে কারফিউ বলবৎ আছে।

এই সময়ে সৌদিতে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের জানাজায় ৬ জনের বেশী মানুষ অংশ গ্রহন করতে পারবে না বলে সৌদি ধর্মমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যেহেতু মসজিদে যেয়ে ফরজ নামাজ পড়তে বারন করা হয়েছে তাই তারাবি নামাজও ঘরেই পড়তে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কুয়েতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ জনই মৃত্যুবরন করেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ১২৩৪ জন ও এ পর্যন্ত সুস্থ্য হয়েছে ১৪২ জন। কুয়েতে বিকাল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ আছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা অব্যহত থাকবে। দেশটির অনেকগুলি এলাকা ২৪ ঘন্টা লকডাউনে আছে। তবে কুয়েতি নাগরিকরাই ভাইরাসটি দ্বারা প্রথমে আক্রান্ত হয়েছেন। ইরান ফেরত কোয়েতি নাগরিকরাই প্রথম দেশটিতে করোনা ভাইরাস ছড়ায়। আর তাদের মাধ্যমেই দেশটিতে সামাজিকভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঘটেছে।

ইসরায়েলে করোনা ভাইরাস ব্যপক হারে বিস্তার লাভ করেছে। অতি উন্নত ও ক্ষমতাধর এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১০৮৭৮ জন ও এ পর্যন্ত ১০৩ জন মৃত্যুবরন করেছে। মাত্র ৮০ লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশে প্রতি ১০ লক্ষে ১২৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছে করোনা ভাইরাসে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৩৭৩৬ জন ও মৃত্যুবরন করেছে ২০ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৫৮৮ জন সুস্থ্য হয়েছে ও চিকিৎসাধীন আছে ৩১২৮ জন। দেশটির প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মাধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৩৭৮ জন। আর প্রতি ১০ লক্ষ জন সাধারনের মধ্য মৃত্যুবরন করেছে ২ জন।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্য প্রথমে করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঘটে ইরানে। শুরুতে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেক বেশী ছিল। তবে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ইতিমধ্য অনেক কমে এসেছে। এ পর্যন্ত দেশতিতে আক্রান্ত হয়েছে ৭১৬৮৬ জন ও মৃত্যুবরন করেছে ৪৪৭৪ জন। প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫৩ জন ও প্রতি ১০ লক্ষে মৃত্যুবরণ করেছে ৫৩ জন।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ ইরাকে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৩৫২ জন ও মৃত্যুবরন করেছে ৭৬ জন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্য ইরাকে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এখানে প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্ত হয়েছে ৩৪ জন ও মৃত্যুবরন করে প্রতি ১০ লক্ষে ২ জন। ইরান ফেরত ইরাকিদের মাধ্যমেই দেশটিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঘটে।

সৌদি আরবের পাশে ছোট দেশ কাতারে এ পর্যন্ত ২৯৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছে ও মৃত্যুবরন করেছে ৭ জন। প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৩৪ জন ও প্রতি ১০ লক্ষে মৃত্যু ২ জনের। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্য কাতারে আক্রান্তের হার অনেক বেশী।

বাহরাইনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০৮৭ জন ও দেশটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। ইতিমধ্য সুস্থ্য হয়েছে ৫৫৭ জন ও চিকিৎসাধীন আছেন ৫২৪ জন। দেশটির প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩৯ জন ও প্রতি ১০ লক্ষ মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক ছোট দেশ ওমানে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৫৯৯ জন ও মৃত্যুবরন করেছে ৪ জন। প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্য আক্রান্ত ১১৭ জন ও প্রতি ১০ লক্ষে মৃত্যু ০.৮ জন।

জর্ডানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮১ জন ও এ পর্যন্ত মৃত্যুবরন করেছে ৭ জন। এই দেশটিতে ইতিমধ্য সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৭৭ জন ও ১৯৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন। প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ জন ও মৃত্যু হার এখানে তুলনামূলকভাবে কম, ১০ লক্ষে ০.৭ জন।

লেবাননে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩০ জন ও মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২০ জন। জনসংখ্যা অনুপাতে দেশটি মৃত্যু হার বেশী। প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা যথাক্রমে ৯২ জন ও ৩ জন।

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেনে এ অঞ্চলের দেশগুলির মধ্য আক্রান্তের হার সবচেয়ে কম। এখানে মাত্র ১ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রুহীরা সেদেশের সরকার ও সৌদি জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত আরেক দেশ সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৫ জন ও ইতিমধ্য মৃত্যুবরন করেছে ২ জন। এখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেক কম। প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা ১ জন ও মৃত্যুর সংখ্যা ০.১ জন।

ফিলিস্তিনে আক্রান্ত হয়েছে ৮৮ জন ও মৃত্যুবরন করেছে ২ জন। দেশটিতে প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্ত ও মৃত্যর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৬ জন ও ০.৪ জন।

মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। অধিকাংশ দেশে লকডাউন ও কারফিউও বলবৎ আছে।