যে কারনে দুই সিটির ভোটে বিএনপির সূচনীয় পরাজয় হয়েছে
শান্তিপূর্ণভাবে দুই সিটির ভোট গ্রহন শেষ হয়ে গেল। এই ভোটে ঢাকা দক্ষিনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস বিপুল ভোটে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইসরাক হোসেনকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাপসের প্রাপ্ত ভোট ৪২৪৫৯৫ ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ইসরাকের প্রাপ্ত ভোট ২৩৬৫১২। ফলাফলে দেখা যায় ১৮৮০৮৩ ভোট বেশী পেয়ে ফজলে নুর তাপস ঢাকা দক্ষিনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে ঢাকা উত্তরের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের আতিকুল ইসলাম। আতিকুলের প্রাপ্ত ভোট ৪৪৭২২১ ও তাবিথের প্রাপ্ত ভোট ২৬৪১৬১। ফলাফলে দেখা যায় আতিকুল তাবিথ আউয়াল থেকে ১৮৩০৬০ বেশী পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে কাউন্সিলর পদেও ৯০% ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বিএনপি প্রার্থীদের সূচনীয় পরাজয়ের কারন বিশ্লেষনে দেখা যায়-
১। তফসিল ঘোষনার আগে থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে নানা নেতিবাচক কথাবার্তা প্রচার হতে থাকে। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ট হবে না এটা প্রমান করার জন্যই তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফখরুলের এ কথার অর্থ দাঁড়ায় আওয়ামীলীগ যেভাবেই হউক নির্বাচনে জিতে যাবে। এতে বিএনপির ভোটারদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। ফলশ্রুতিতে তারা ভোট দিতে কম আসে।
২। ইভিএম নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ড থেকে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রচারনা চালানো হয়। যাতে বিএনপির ভোটাররা ভোট দিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। তাদের মধ্য ইভিএম ভীতি কাজ করে। তাই বিএনপির সমর্থিত ভোটাররা অনেকেই ভোট দানে বিরত থাকেন।
৩। ইভিএম ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে ঢালাওভাবে নেতিবাচক মিথ্যা প্রচারনা সাধারন ভোটাররা স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। তাই সাধারন ভোটারদের অধিকাংশ বিএনপি প্রার্থীদের ভোট না দিয়ে ব্যপক হারে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট প্রদান করে।
৪। পুরো নির্বাচন জুড়ে বিএনপি ও এর প্রার্থীরা নানা মিথ্যা অভিযোগ দিতে থাকে মিডিয়ায় ও নির্বাচন কমিশনে। এই বিষয়টি সাধারন ভোটাররা ভালভাবে নেয়নি।
৫। দুই সিটিতেই বিএনপি প্রার্থী থেকে আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা অনেক বেশী যোগ্য হওয়ায় ভোটাররা তাদের প্রতিই বেশী সমর্থন জানিয়েছে।
৬। যেহেতু আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আছে, তাই আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা জয়লাভ করলে এলাকায় বেশী উন্নয়ন হবে তাই ভোটাররা আওয়ামীলীগ প্রার্থীকেই বেশী অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
৭। ভোটে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের প্রচার প্রচারনায় খুব একটা দেখা যায় নাই। ফলে কর্মী সমর্থকরা হতাশ ছিলেন ও এই হতাশায় তারা ভোটের প্রচারে উৎসাহ নিয়ে প্রচারনায় অংশ গ্রহন করতে পারেন নাই।
৮। আওয়ামীলীগ সরকার নানা ক্ষেত্রে ব্যপক উন্নয়ন করায় ভোটাররা আওয়ামীলীগ সরকারের প্রতিই বেশী আস্থা রাখছেন।
৯। দুর্নীতিসহ নানা ক্ষেত্রে অনেক প্রশংসনীয় কাজ করায় জনগন শেখ হাসিনার প্রতিই বেশী আস্থা রাখছেন। যা দুই সিটির নির্বাচনে প্রতিফলিত হয়েছে।
১০। মির্জা ফখরুল ইসলামের নিলজ্জ লাগামহীন মিথ্যাচার সাধারন ভোটাররা ভালভাবে নেয়নি। আওয়ামীলীগ সরকারের সারাদেশে দেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন নিয়েও ফখরুলসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের ধারাবাহিক নেতিবাচক কথাবার্তা মানুষ সাধারনভাবে নেয়নি।