কুর্মিটুলায় ঢাবির ধর্ষিত ছাত্রীকে নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা চলছে
বিডি খবর ৩৬৫ ডটকমঃ
গত রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় রাজধানীর কুর্মিটুলা বাসস্ট্যান্ডের নিকটে ঢাবির দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া এক ছাত্রী ধর্ষিত হয়। এই সময় মেয়েটি ঢাবির বাসে করে উক্ত বাসস্ট্যান্ডে নামলে এক ব্যক্তি মেয়েটির মুখ চেপে ধরে টেনে পিছনে একটি ছোট ঝুপড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটিকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এই অবস্থায়ও মেয়েটির ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালায় ধর্ষক। রাত দশটায় জ্ঞান ফিরলে মেয়েটি একটি সিএনজিতে করে ঢাবি হলে ফিরে বান্ধবীদের ঘটনা খুলে বলে। তারা মাঝ রাতে মেয়েটিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। ডাক্তারী পরীক্ষায় মেয়েটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে মেডিকেল থেকে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার কথা ঢাবিতে ছড়িয়ে পড়লে রাতেই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে ঢাবির শিক্ষার্থীরা। ঘটনার দিন রাত আড়াইটায় ছাত্রলীগ প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল বেড় করে। রাত সাড়ে তিনটায় কোঠা আন্দোলনকারীদের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ ক্যাম্পাসে মিছিল করে। রাত ৪টায় এক ছাত্র রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশনে বসে। সোমবার সারাদিনই ঢাবি ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলি মিছিল মিটিং ও প্রতিবাদ চালিয়ে যায় নানাভাবে। বামদের নেতৃত্বে একদল ছাত্র শাহবাগ মোড়ে অবরোধ করে। ফলে ব্যস্ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহনগুলি কয়েক ঘন্টা জ্যামে পড়ে থাকে। এই অবরোধের ফলে সোমবার কমপক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ রাজধানীতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে।
সোমবার শাহবাগে অসুস্থ্য ঢাকসু ভিপিও চলে আসে ও সেখানে বক্তব্য প্রদান করে। অর্থাৎ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব জাহিরের নিয়মিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। গতকাল ঢাবি ক্যাম্পাসে এমন অবস্থা ছিল যে, ‘ ইস্যু পাইছি তোরা কে কোথায় আছত তারাতারি চলে আয়। এইবার সরকার কিংবা ছাত্রলীগকে কাবু করা যাবে’। সারাদিনই এই ঘটনায় ছাত্রলীগ কিংবা যুবলীগ কিংবা বিশেষ কোন বাহিনীর হাত আছে কিনা তা বের করার চেষ্টা করা হয়। সরকার বিরোধীরা এই ঘটনাকে রাজনীতি করনের চেষ্টা অব্যহত রাখে।
সরকার, প্রশাসন ও ঢাবির পক্ষ থেকে এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের ঘোষনা দেওয়া হয়। ভিসিসহ প্রশাসনের কর্তারা ইতিমধ্য হাসপাতালে যেয়ে মেয়েটিকে দেখে এসেছেন। তা সত্বেও ঢাবির বিভিন্ন সংগঠন মঙ্গলবারও বাদ-প্রতিবাদ অব্যহত রাখে। একদল আবার নতুন করে অনশনেও বসেছে আজ, আবার কেউবা আলপনা অংকন করছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে। সবই মনে হয় প্রচার পাওয়ার জন্য। আমরা দেশের মানুষ যদি এতো ভাল হতাম তাহলে দেশে এতো খুন, ধর্ষণ, ঘোষ, চাঁদাবাজ, দখলবাজ কেন এবং কারা এসব করে? প্রতিদিন ৫০০ কোটি টাকার ইয়াবা কারা বিক্রি ও সেবন করে? অপরাধ কিংবা ধর্ষণ হয় না এমন কোন দেশ পৃথিবীতে খুজে পাওয়া যাবে কি? এই সমস্ত ঘটনার বিচারের দাবি ও প্রত্যাশা করা উচিত। তবে রাজনীতির মোড়কে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা মোটেও কাম্য নয়। প্রতিদিনই সারাদেশে কম বেশী ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেগুলি নিয়ে আন্দোলন করা হয় না কেন? শুধু বিশেষ স্থানের কেউ ভিকটিম হলেই আন্দোলন হয় কেন?