বুয়েটের আন্দোলনে সাধারন ছাত্রদের নামে হাল ধরেছে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা

বিডি খবর ৩৬৫ ডটকমঃ
পাইছি ইস্যু! এইবার সরকারের পতন ঘটানো যাবে! আওয়ামীলীগ সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরে যাব না!
কয়েক দিন আগে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকান্ড নিয়ে বুয়েটে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। হত্যাকান্ডের পরপরই আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রায় সকলকেই ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। হত্যাকারীরা সকলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে বুয়েটের ছাত্রদের সূত্র থেকে জানা গেছে কিংবা ছাত্ররা দাবি করে আসছে।
এই হত্যাকান্ডটি নিঃসন্দেহে একটি জঘন্যতম হত্যাকান্ড। এর পরিপেক্ষিতে বুয়েটের ছাত্ররা প্রথমে ৮ দফা দাবি ও পরে তা বাড়িয়ে ১০ দফায় উন্নিত করে বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি জানায়। বুয়েট ভিসি ছাত্রদের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে ইতিমধ্যই অনেকগুলি দাবি বাস্তবায়ন করেছেন। বাকি দাবিগুলিও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
 
ইতিমধ্য এই ঘটনায় জড়িত ১৯ জন ছাত্রকে সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে আদালতে দোষী প্রমানিত হলে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে বলে ভিসি জানিয়েছেন। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্রদের দাবির পরিপেক্ষিতে। পাশাপাশি শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বুয়েটে।
 
বুয়েট ছাত্রদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার পরও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছে নতুন করে। আবার কিসের আন্দোলন? এইটা হলো সরকার বিরোধী আন্দোলন। এখন বুয়েটের ছাত্রদের আন্দোলনের নেতৃত্ব পিছন থেকে দিচ্ছে শিবির, ছাত্রদল ও মৌলবাদী ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও উক্ত সংগঠনগুলো প্রকারন্তরে রাজনীতিই করছে এখনো। তবে বেশ ধরেছে সাধারন ছাত্রদের।
 
আবরার একজন মেধাবী ছাত্র। আবার যারা তাকে হত্যা করেছে তারাও তো মেধাবী। বুয়েটের সকল ছাত্রই মেধাবী। হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছেন তারাও মেধাবী। আমরা তা হলে কাকে বিশ্বাস করবো। কার কথা শুনবো? কার ওপর ভরসা করবো?
 
আবরার হত্যাকন্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজনকে হত্যা করতে এতো লোকের প্রয়োজন হয় না। আবার বারান্দা দিয়ে হেটে গেলেই সকলেই হত্যাকারী তা প্রমান হয় না। কাজেই ভিডিও ফুটেজ দেখে ১৯ জনকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার সঠিক হয় নাই বলেই মনে হয়। আবরারকে পিটানো হয়েছে রুমের ভিতরে। রুমের ভিতরে কোন সিসি ক্যামেরা ছিল না। কাজেই আসলে কয়জন কিংবা কারা মেরেছে তা ভিডিতে নেই। এটা সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে প্রমান সাপেক্ষ ব্যপার।
 
এর আগেও তো বুয়েটে সাবিকুন নাহার সনি খুন হয়েছিল। সেই সময় কি সাধারন ছাত্ররা আন্দোলন করেছিল? সেই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কয়জন গ্রেপ্তার হয়েছিল? কয়জনেরই বা ছাত্রত্ব বাতিল হয়েছিল? জানা আছে কারো? সেই সময়কার ভিসি বা সরকারের কি ভুমিকা নিয়েছিল-জানা থাকলে বলেন।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি খুন হয় নাই কেউ? ডজন ডজন খুন হয়েছে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহী ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন তো কেউ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেনি। এখন কেন? এসবই রাজনীতি! বুয়েটের সাধারন ছাত্র নামধারীরা তো এখনো রাজনীতিই করে যাচ্ছে। আবার তারাই রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছেন।সেলুকাস! আপনি বাক স্বাধীনতা চাচ্ছেন আবার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছেন। এইটা স্ববিরোধীতা নয়কি?
বরং বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নাই বা সীমিত বলেই এমন জঘন্যভাবে খুন হতে হয়েছে মেধাবী ছাত্র আবরারকে। মাথা ব্যথা হলে মাথা না কেটে চিকিৎসা করাই উত্তম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *