নেতিবাচক ধারা ছেড়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরে না আসলে বিএনপি আরো বিধ্বস্ত হবে
বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
পচাত্তরের ১৫ই আগস্টের কিছু দিন পরেই সামরিক শাসন আমলে ও সামরিক শাসনের পিষ্টপোষকতায় গড়ে উঠা রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনা শাসক জিয়াউর রহমান। জনমতকে বিভ্রান্ত ও আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দিয়ে ব্যপক জনসমর্থন লাভ করে দলটি। শুরুতে প্রবল প্রতাপ নিয়ে আওয়ামীলীগকে এক প্রকার কোনঠাসা করে দেশ শাসন করে দলটি। কোন রকমের নীতি আদর্শ ছাড়াই দলটি দেশ শাসন করে। আওয়ামীলীগ বিরোধী প্রচারনাই একমাত্র নীতি ছিল দলটির যা এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আছে।
জিয়াউর রহমানের পর ক্ষমতায় আসে আরেক সামরিক শাসক এরশাদ। ৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক ও বেসামরিক মিলিয়ে ক্ষমতায় থাকে এরশাদের দল জাতীয় পার্টি। দেশ শাসনে বিএনপির মত জাতীয় পার্টিও আওয়ামীলীগ বিরোধী প্রচারনাই দলীয়ভাবে বেশী প্রাধান্য দেয়। আন্দোলন হয় এরশাদের বিরুদ্ধে, ৯০ এর এক সময়ে এরশাদের সামরিক শাসনের পতন ঘটে। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আবারো ক্ষমতায় চলে আসে বিএনপি। এই নির্বাচনে বিএনপি বেশী আসন পেয়ে সরকার গঠন করলেও বেশী ভোট পেয়েও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় যেতে পারেনি। এই নির্বাচনেও আওয়ামীলীগকে জড়িয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়। যেমন ধর্মীয় অনুভুতি ও ভারতকে জড়িয়ে নানা ধরনের প্রচারনা। তবে এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বেশী ভোট পাওয়াতে প্রমান হল যে, আওয়ামীলীগ বিরোধী প্রচারনা সমূহ মানুষ আর আগের মত গ্রহন করছে না।
৯৬ সালে সংখ্যা গরিষ্টতা নিয়ে আওয়ামীলীগ দীর্ঘ ২৩ বছর পর ক্ষমতায় আসে। এতে প্রমান হল আওয়ামীলীগকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য জনগন তেমন গ্রহন না করায় আওয়ামীলীগ বেশী আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ দেশী বিদেশী অপপ্রচার ও চক্রান্তে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে ব্যপক জনসমর্থন নিয়ে আওয়ামীলীগ আবারো ক্ষমতায় আসে ও সর্বক্ষেত্রে ব্যপক উন্নয়ন সাধন করে। আওয়ামীলীগের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগন ব্যপকভাবে সমর্থন করে। ইতিমধ্য প্রিন্ট মিডিয়া ও ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যপক সম্প্রসারনের ফলে ও শিক্ষার হার ব্যপকভাবে বৃদ্ধির ফলে মানুষ বুঝতে পেড়েছে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে চালানো প্রচারনা সবই মিথ্যা। আওয়ামীলীগের দেশ শাসন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। ফলে বর্তমান সময়ে এসে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তার দাড়ে কাছে কোন দল ভিড়তে পারছে না। তাই বিগত ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির সূচনীয় পরাজয় ঘটেছে।একমাত্র আওয়ামীলীগ বিরোধী ও আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অপপচারের নীতি হালে আর মানুষ গ্রহন করছে না। আবার দেশবাসীকে বিএনপি কোন স্বপ্নও দেখাতে পারছে না। ফলে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি এখন প্রায় জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন। আওয়ামীলীগকে জড়িয়ে ভারত বিরোধী নীতি, সাম্প্রদায়িক কথা বার্তা, কিংবা ব্যপক মিথ্যাচার এখন মানুষ আর খায় না। এসব নিলজ্জ মিথ্যাচার থেকে বেড়িয়ে এসে বিএনপিকে দেশের উন্নয়ন ও উন্নতি নির্ভর নীতি গ্রহন করতে হবে। অন্যথায় তারা জনগনের মন জয় করতে পারবে না।
ধানের ছড়াকে ধানের শীষ হিসাবে মানুষ আর খাচ্ছে না, দলীয় প্রদানের ৫ বার জন্মদিন মানুষ পছন্দ করছে না, শুধু খালেদা জিয়া কিংবা তারেক জিয়ার মিথ্যা জয়গান মানুষ শুনতে চায়না, খালেদা জিয়া ও পুত্র তারেক জিয়া নিরাপরাধ এটা মানুষ বিশ্বাস করে না। ৭৫% শিক্ষার হারের দেশে এইট পাস প্রধানমন্ত্রী আর জনগন দেখতে চায়না। বিএনপি নেতারা সব সাধু এটা হালে আর মানুষ বিশ্বাস করে না। বিএনপির অতীত নির্ভর রাজনীতি এখন প্রায় পচে গেছে। তাই দলটিকে টিকে থাকতে হলে উন্নয়ন ও প্রগতির নীতি গ্রহন করতে হবে, দলে শিক্ষিত ও বিজ্ঞজনদের গুরুত্ব দিতে হবে। এই সময়ে এসে গনগনের চাহিদা কি তা বিএনপি নেতৃত্বকে জানতে হবে ও সেই মোতাবেক নীতি গ্রহন করতে হবে।