কামাল-মান্নারা কি আওয়ামীলীগের বি টিম হিসাবে কাজ করছে

নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ডঃ কামাল হোসেন গংদের তৎপরতা নিয়ে রাজনীতিক বিশ্লেষকরা এর রহস্য ভেদে নানা ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নির্বাচনকে ঘিরে এই চক্রের তৎপরতা মানুষ সন্দেহের চোখে দেখছে। এই চক্রের কুটকৌশলে আটকা পড়েছে বিএনপি। কামাল-মান্না গংরা সারাদেশ ব্যপী বিএনপির বিশাল অস্তিত্বকে ম্লান করে দিয়ে দাবার চালে বন্ধি করেছে বিএনপিকে।

তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে ১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে থেকেই  আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিল। কিন্তু শেষ অবধি সুপ্রিম কোর্ট ও সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে বিধান ছিল তা বাতিল হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও বিএনপি-জামাতসহ সমমনা দলগুলি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃ বহালের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করে ও ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন বয়কট ও নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষনা দেয়। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বিরোধী দলের অংশ গ্রহন ছাড়াই সেই নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্টতা নিয়ে আওয়ামীলীগ জয়লাভ করে ও সরকার গঠন করে। তবে এই নির্বাচন সাংবিধানিক হলেও এর গ্রহন যোগ্যতা নিয়ে সর্ব মহলে প্রশ্ন ছিল। অপরদিকে নির্বাচন বৈধ ও আইন সম্মত ছিল। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ঐ নির্বাচন নিয়ে খুশি না হলেও স্বীকৃতি দেয়। এর পর থেকে বিএনপি আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃ বহালের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যায়।

অবশেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় চলে আসলে আবারো ত্তত্ববধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন যাবে না বলে ঘোষনা দিয়ে আসছিল বিএনপি। গত দশ বছরে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশে সর্ব ক্ষেত্রে ব্যপক উন্নয়ন সাধন হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন দেশ বিদেশে বেশ প্রসংশা পেয়েছে। দেশের মানুষের উন্নয়নে আওয়ামীলীগের নিরলস প্রচেষ্ঠায় দেশের মানুষও বেশ খুশি। ফলে বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে আওয়ামীলীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আবার ক্ষমতায় আসবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি বিএনপি নেতৃত্বও জানে। তাই তারা একাদশ জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাবার ঘোষনা দিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে ক্ষমতায় যাবার পথের সন্ধানে ছিল।

এর মধ্য কামাল হোসেন ও মান্না গংদের মাধ্যমে রাজনীতিতে নতুন মেরুকরন শুরু হয়। এই মেরু করনের অংশ হিসাবে প্রথমে মান্না গঠন করেন নাগরিক ঐক্য নামের রাজনৈতিক সংগঠন। এর পরে কামাল মান্না রবরা মিলে গঠন করেন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট। অপরদিকে এর আগেই বি চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠন হয়েছিল যুক্তফ্রন্ট। শুরু হয় নীতিহীন রাজনীতির নানা পর্ব। কামাল মান্নারা এক সময়ে বিএনপি নামক বিশাল দলটিকে গ্রাস করেন ঐক্য ফ্রন্টের সুগন্ধির মাধ্যমে। আর বিএনপিও বিলীন হয়ে যায় আওয়ামীলীগের এই সাবেক নেতাদের কুটচালে। বিএনপি মনে করেছিল তারা একাদশ নির্বাচন বানচালের জন্য যাকে পাবেন তার সাথেই মিশে যাবেন। কিন্তু কামাল হোসেন ও মান্না গংদের উদ্দেশ্য তো অন্য কিছু হতে পারে তা বিএনপি বুঝতে পারেনি।

ফলে কামাল হোসেনের প্রথম চালেই কপোকাত হয়ে যায় বিএনপি। কামাল হোসেনের নব গঠিত জাতীয় ঐক্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেয় আলাপ আলোচনার জন্য। প্রধানমন্ত্রীও কামাল হোসেনের আলোচনার প্রস্তাব লুফে নিয়ে সংবিধান সম্মত সকল ধরনের আলোচনায় সম্মত হয় ও আলোচনা পর্বটি শুরু করে। এই আলোচনার মাধ্যমে বিএনপির অজান্তেই নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী হয়। যেখান থেকে বিএনপির আর ফিরে যাবার পথ নাই। নির্বাচনের ট্রেন এখন তার নিজস্ব গতিতে চলছে। সকল দলই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দেশে বিদেশে এই নির্বাচন নিয়ে ব্যপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আওয়ামীলীগের সাবেক নেতা কামাল হোসেন গংরা অনুঘটকের মতো কাজ করে নির্বাচনে সকল দলের অংশ গ্রহন নিশ্চিত করেছেন। ফলে সরকার অংশ গ্রহনমূলক নির্বাচন নিয়ে বেশ স্বস্তিতেই আছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্লেষকরা মনে করেন কামাল মান্না গং আওয়ামীলীগের বি টিম হিসাবেই কাজ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.