যে যে কারনে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে পারে

নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
রাজনীতির নানা সমীকরনে সাম্প্রতিকালে ডঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। এই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া পরে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নামে নতুন জোট গঠন করে। এই জোটের মূলদল ডঃ কামাল হোসেনের গন ফোরাম, আ স ম রবের জেএসডি ও মান্নার নাগরিক ঐক্য। পরে বিএনপি এই জোটে যোগ দেয়। রাজনীতির নানা রসায়ন ও এর সমীকরন মিলাতে না পেরে বি চোধুরীর বিকল্প ধারা ঐক্য ফ্রন্টে যোগ দেয়নি। বি চৌধুরীর নেতৃত্বে থেকে যায় যুক্ত ফ্রন্ট। পরে বি চৌধুরী মহাজোটের সাথে যোগ দিয়ে এখন আসন নিয়ে দেন দরবার করছে।
ঐক্য ফ্রন্ট এক পর্যায়ে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেয়। সংবিধান সম্মত উপায়ে সংলাপে রাজী হয়ে যান শেখ হাসিনা। ফলশ্রুতিতে বিএনপিসহ ঐক্য ফ্রন্ট ও অন্যান্য দলের সাথে প্রধানমন্ত্রী তথা ১৪ দলের সাথে ফলপ্রসূ সংলাপ হয়। দেশের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে ৭৫টি দলের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ হয়।
ঐক্য ফ্রন্ট ভেবেছিল সংলাপের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী উড়িয়ে দিবেন। আর এই নিয়ে বিএনপিসহ ঐক্য ফ্রন্ট আন্দোলন গড়ে তুলবে ও এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাবে। তার পর ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবেন। কিন্তু ঐক্য ফ্রন্টের প্রথম পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সংলাপের পর সারা জাতি হাসিনার ওপর আস্তা রেখে নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত হয়। ফলে অন্য কোন ইস্যু তৈরী করতে না পেরে ঐক্য ফ্রন্টসহ তাদের সমমনা দলগুলি নির্বাচনে যেতে বাধ্য হয়।
এই ঐক্য ফ্রন্ট প্রথমদিকে ডঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে থাকলেও পরে এর সিদ্ধান্তসহ সমস্ত কিছুর নেতৃত্ব চলে আসে বিএনপির হাতে। এক পর্যায়ে ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে বাধ্য হয়। কিন্ত ভিতরে ভিতরে তারা নির্বাচন থেকে বের হয়ে যাবার ইস্যু খোজতে থাকে এবং এখনো তা অব্যহত আছে। ঠিক যে যে কারনে বিএনপিসহ ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে চাচ্ছে তা হল ………………..
* প্রথমতঃ বিগত ১০ বছরে আওয়ামীলীগ সরকারের সারা দেশে ব্যপক উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডের ফলে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা ব্যপক হারে বেড়েছে। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী নির্বাচন হলে বিএনপির জয়লাভের কোন সম্ভাবনা না থাকায় তারা নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর পথ খোজছে।
* দ্বিতীয়তঃ বিএনপি মনে করেছিল আইনের ফাকফোকর দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন। কিন্তু হাইকোর্টের গতকালের রায়ে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ গ্রহনের আইনগত যোগ্যতা নাই তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে আজ আপিল বিভাগও সারা দেয়নি। ফলে নির্বাচনে জিতলে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন কিংবা হারলে বিরোধী দলীয় নেত্রী হবেন সেই সম্ভাবনা এখন আর নাই।
* তাহলে বিএনপি জোট থেকে কে সংসদে বিরোধী দলের নেতা হবেন। নিশ্চয়ই বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া না। অর্থাৎ যিনি সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হবেন বিএনপির সমস্ত ক্ষমতা চলে যাবে তার হাতে। সেই ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কর্তৃত্ব হয়ত ধীরে ধীরে কমতে থাকবে ও এক পর্যায়ে তারা বিএনপিতে গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। তাই বিএনপির নেতৃত্ব খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার হাতে রাখতে হলে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর কোন বিকল্প নাই। প্রতি আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী নির্বাচনেও নির্বাচন থেকে সরে যাবার ইঙ্গিত মিলে। যেহেতু বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাবে তাই একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে তাদের কোন সমস্যা নাই। অপরদিকে তারা অধিক সংখ্যক প্রার্থীকে খুশি রাখতে পারলো দলীয় মনোনয়ন দিয়ে।