সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ ১৯টির বেশী আসন পাবেনা-কাদের সিদ্দিকী

মতামত ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

সম্প্রতি ডঃ কামাল হোসেনের সাথে মিটিয়ের পর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ ১৯টি আসনের বেশী পাবে না। এর আগে অবশ্য তিনি বলেছিলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ ২০টি আসন পাবে। তার এই কথার ভিত্তি কি, কোন গবেষনা কিংবা জরিপের মাধ্যমে তিনি এই পরিসংখ্যানের কথা ব্যক্ত করেন তা তিনি বলেন নি।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ৭১ রনাঙ্গনের একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের বিশাল এলাকা জুড়ে যুদ্ধ করেছিল তার নেতৃত্বাধীন বাহিনী। তার এই বীরত্বগাথা ইতিহাস এদেশের সকল মানুষই জানে। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে কাদের সিদ্দিকী ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন ভারতে নির্বাসনে থাকার পর তিনি ১৯৯০ সালে দেশে ফিরে আসেন ও আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। কিন্তু আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তিনি খুব একটা সুবিদা করে উঠতে সক্ষম হননি। আওয়ামীলীগকে তিনি ডুমিনেট করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা করতে পারেন নি। তিনি আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতার সাথে বিভিন্ন বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।

এক পর্যায়ে আওয়ামীলীগে সার্বাইভ করতে না পেরে বেড়িয়ে যেয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। সে সময়ে তার ধারনা ছিল এই দেশে তার মত প্রাজ্ঞ ব্যক্তি আরেকজনও নেই। তাই তিনি মনে করেছিলেন তিনি নতুন দল করলে আওয়ামীলীগের অধিকাংশ নেতা কর্মী তার দলে যোগ দিবে, দেশের সকল মানুষ তো আছেই। আর তার পাশের লোকজনও হয়ত তাকে এমন ধারনাই দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে সেরকমটি আর হয়ে উঠেনি। বাস্তব অবস্থা হল সারা দেশে এমন একটি আসনও নেই যেখানে তিনিসহ তার দলের কেউ জিততে পারবে। কিন্ত যখন কথা বলেন তখন মনে করেন সারা বাংলাদেশের মানুষই তার পাশে আসে।

শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে কাদের সিদ্দিকী পছন্দ করেন না। স্বাভাবিকভাবেই কাদের সিদ্দিকী যেখানেই যান সেখানেই মানুষ তাকে সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা শুনান কিংবা সরকারের আরোও অনেক সমালোচনা করেন। তিনি সরকারের বিরোধী লোক হিসাবে স্বাভাবিকভাবেই তার কাছে কেউ সরকারের সফলতার গল্প করবে না। কাজেই তিনি তো দেখতে পাচ্ছেন তার চারদিকে শুধু সরকারের সমালোচনা। অতএব সরকারের জনপ্রিয়তা একেবারেই নাই। তাই হয়ত তিনি মনে করেন আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ১৯টির বেশী আসন পাবে না। আসলে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর নির্বাচন হলেই সেটা বুঝা যাবে।

অপরদিকে আওয়ামীলীগের কামাল হোসেনও মনে করেছিলেন ও তার পক্ষে থাকা লোকজন তাকে বুঝিয়েছিলেন তিনি নতুন দল করলে আওয়ামীলীগের বেশীর ভাগ নেতাকর্মী তার দলে চলে আসবে। আর দেশের সকল মানুষ তো আছেই। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। এখন সারা দেশে তার দুই হাজার সমর্থকও নাই। মাহমুদুর রহমান মান্না আরেক জ্ঞান পন্ডিত। কামাল হোসেন ও কাদের সিদ্দিকীর মতই একই ধারনা পোষন করেন। আওয়ামীলীগে যোগ দিলেন, আবার বেড়িয়ে গেলেন। পরে তিনি নাগরিক ঐক্য নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। সারাদেশে তার শ খানেক সমর্থক নাই। তিনিও স্বপ্ন দেখেন শেখ হাসিনাকে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী হবেন। কি চমৎকার গনতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *