৪ঠা অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর অফিসে লেবাসধারী ছাত্রদের হামলা ও কিছু প্রশ্ন

নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
গত ২৯শে জুলাই শহিদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই ছাত্র জাবালে নুর পরিবহনের একটি বাসের বেপরোয়া গতিতে চলার সময় গাড়ীর নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু বরন করে। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকায় ছাত্ররা এই হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিশেষ করে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্ররা ক্লাশ না করে রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও এই সময় কোন কোন স্থানে ছাত্ররা ব্যপকভাবে গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। পাশাপাশি তারা উত্তরা, ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ী, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে রাস্তা অবরোধ করে সব ধরনের গাড়ীর কাগজপত্র পরীক্ষা করতে থাকে।
এই সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স, ড্রাইভার ও গাড়ীর কাগজপত্রে ব্যপক অনিয়ম ধরা পড়ে। ছাত্রদের এই উদ্যোগ ব্যপক প্রশংসা পায়। ছাত্ররা ৯ দফা দাবি পেস করে সরকারের কাছে। সরকার নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পঞ্চমদিনে ছাত্রদের সমস্ত দাবি মেনে নেয় ও শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষন করে। দাবি দাওয়া দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে কোমলমতি ছাত্রদের বিদ্যালয় ও ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করে। ব্যপক সারাও মিলে ছাত্রদের পক্ষ থেকে।
কিন্তু স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীরা এই দাবি মেনে নিলেও একটি স্বার্থানেষ্বী মহল রাজনৈতিক অভিলাশ নিয়ে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ৩রা আগস্ট শুক্রবারও এই আন্দোলন চলে শিবির ও ছাত্রদলের নেতৃত্বে। সরকারের পক্ষ থেকে কোমলমতি ছাত্রদের উদেশ্য বলা হয়, তোমাদের এই আন্দোলন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। তোমাদের পিঠে বর করে সরকার পতনের আন্দোলনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে বিএনপি জামাতসহ অন্যান্য কুচক্রী মহল। তোমরা ঘরে ফিরে যাও, অভিবাবকদের উদেশ্য বলা হয়, আপনারা আপনাদের সন্তানকে ঘরে ফিরিয়ে নেন।
এই অবস্থায় ৪ঠা অগাস্ট শনিবার এই আন্দোলন পুরাপুরি রাজনৈতিক রূপধারন করে। দেশের বাহির থেকে আসা ছাত্র শিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্কুল ড্রেস পড়ে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নেয়। তারা অন্যান্য সাধারন ছাত্রদের সাথে মিশে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় ও জিকাতলা মোড়ে জমায়েত হয়ে সরাসরি ও ফেসবুকের মাধ্যমে নানা রকমের প্রপাকান্ডা ছড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে গুজব ছড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর পলিটিকেল (ধানমন্ডি ৩) অফিসে হামলা করে ব্যপক ক্ষতি সাধন করে।
এক পর্যায়ে ওই অফিসে থাকা লোকজন তথাকথিত ছাত্রদের দাওয়া করে সরিয়ে দিলে তারা জিকাতলা মোড়ে এসে মারমুখি হয়ে উঠে। এই অবস্থায় সেখানে পুলিশও নিরাপত্তা জোড়দার করে। অপরদিকে সিটি কলেজের সামনে অবস্থানরত ছাত্রদেরকে ছাত্র নামধারীদের একটি গ্রুপ নানা অসত্য তথ্য দিয়ে উত্তেজিত করতে থাকে। এক পর্যায়ে এই ছাত্ররা সংগঠিত হয়ে আবার জিকাতলা মোড়েরদিকে যেয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে হামলা করার চেষ্টা চালালে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি শু্রু হলে এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেখানে অবস্থানরত আওয়ামীলীগ কর্মীরা সম্মিলিতভাবে তথাকথিত ছাত্রদের লাঠি চার্জ করে সরিয়ে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।
এই সময়ে কুচক্রী মহলের সদস্যরা আওয়ামীলীগ অফিসে ধরে নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রীদের কয়েকজনকে রেপ করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। তারা আরো গুজব ছড়াতে থাকে ছাত্রলীগ কয়েজজনকে গুলি করে মেরে ফেলেছে। অনেক ছাত্রকে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। অনেকে ফেসবুক লাইভে এসে এই গুজব ছড়াতে থাকে। এরই মাঝে অভিনেত্রী নোওশাবা, আলোকচিত্র শিল্পী সহিদুল আলমসহ একাধিক ব্যক্তি ফেসবুক লাইভে নানা রকম গুজব ছড়াতে থাকে।
এখন প্রশ্ন হল
*প্রধানমন্ত্রীর অফিসে চক্রান্তকারীরা হামলা করলে দায়িত্বরত পুলিশ কিংবা অফিসে অবস্থানরত কর্মচারী-কর্মকর্তারা কি শুধু বসে বসে দেখবে?
*দ্বিতীয়বার যখন তথাকথিত ছাত্ররা প্রধানমন্ত্রীর অফিসে হামলা করতে যায় তখন কি জিকাতলা মোড়ে অবস্থানরত পুলিশ ও আওয়ামীলীগ কর্মীরা ছাত্রদেরকে চুমা দেওয়া উচিত ছিল?
এক শ্রেনীর পাকিস্তানি সুশিল সাংবাদিক ও তথাকথিত ছাত্রদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি করেন। তারা কেনো প্রধানমন্ত্রীর অফিসে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানাচ্ছেন না? কারন তারা পাকিস্তানি সুশিল সমাজের লোক ও আন্দোলনের রাজনৈতিকরন নিয়ে ব্যস্ত।