যে কারনে রাখাইনে সহিংসতা

নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

অগাস্টের শেষ সপ্তাহের শুরুতে রাখাইনে কে বা কারা ৭ জন বুদ্ধ ভিক্ষুকে জবাই করে হত্যা করে। তার কয়েকদিন বাদে রাখাইনে অনেকগুলো পুলিশ চেক পোষ্টে এক যুগে হামলা করে ১ জন সেনা ও ৮ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন হামলাকারীও নিহত হয়। তারপরই মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বুদ্ধ সন্ত্রাসীরা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হামলা চালিয়ে শতশত রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। তারা রোহিঙ্গা নারীদেরকে ধর্ষন করে অত্যান্ত পৈচাশিকভাবে হত্যা করে। রোহিঙ্গা অধ্যুর্ষিত গ্রামগুলিকে জালিয়ে দেয়। নির্বিচারে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করে। তারপর থেকে প্রান ভয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়। এ সংখ্যা জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী চার লক্ষের ওপরে।

এখন প্রশ্ন হল এ হামলার পিছনে কারন কি? পত্র-পত্রিকা, টিভি ও অন্যান্য মিডিয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা কিংবা দেশ এ হামলার পিছনে নানা কারন তুলে ধরেন। ওইসব বক্তব্য বিশ্লেষন করে নিন্ম লিখিত কারনগুলো পাওয়া যায়। …………………

১. মায়ানমার সরকার ও বুদ্ধ সন্ত্রাসীরা রাখাইনে বুদ্ধ-মুসলিম সহবস্থান কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলনা। মায়ানমার সরকার যুগযুগ ধরে রোহিঙ্গাদের সব রকমের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। ফলে মায়ানমার সরকার ও বুদ্ধ সন্ত্রাসীরা নিজেরাই পুলিশ চৌকিতে হামলা করে রোহিঙ্গা বিতারনের একটি ক্ষেত্র তৈরী করে। আর এই ঘটনাকে অজুহাত হিসাবে দাড় করিয়ে মায়ানমার সরকার সেনাবাহিনীকে দিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালিয়ে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে এক নারকিয় অবস্থা তৈরী করে। সেনা সদস্য ও বুদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলায় টিকতে না পেরে প্রান বাঁচাতে দলেদলে রোহিঙ্গা জীবনের ঝুকি নিয়ে সীমান্ত পাড় হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।

২. সেপ্টেম্বরের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মায়ানমার সফরের সিডিউল ছিল আগে থেকেই। আর পাকিস্তান চাচ্ছিলনা মোদী মিয়ানমার সফর করুক। তাই মোদীর সফর বানচাল করার জন্য পাকিস্তান তাদের গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে মিয়ানমারের পুলিশ চৌকিতে হামলা চালিয়ে সহিংস অবস্থা তৈরী করে। পাকিস্তান নেতৃত্ব মনে করে ছিল রাখাইনে সহিংস অবস্থা থাকলে নরেন্দ্র মোদী মায়ানমার সফরে যাবেন না। তবে নরেন্দ্র মোদী যথা সময়ে মিয়ানমার সফর করেছেন।

৩. বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অনেকদিন যাবৎ লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে কোন অবস্থাতে আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরী করতে পারছিলেন না। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরী করার জন্য পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে রাখাইনে পুলিশ চেকপোষ্টে হামলা চালায়। কারন বিএনপি ভেবেছিল মায়ানমার পুলিশের ওপর হামলা করে তাদের হতাহত করলে মায়ানমার সেনাবাহিনী ও বুদ্ধ সন্ত্রাসীরা ক্রুদ্ধ হয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হামলা চালাবে। এই হামলার মুখে প্রান বাঁচাতে রোহিঙ্গা মুসলমানরা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসবে। বিএনপি নেতৃত্ব মনে করেছিল আওয়ামীলীগ নেতৃত্ব হয়ত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিবে না। আর এটাকে কেন্দ্র করে মৌলবাদী গোষ্টীগুলিকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। কিন্ত সরকার মানবিক কারনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়। শেখ হাসিনার এ সিদ্ধান্ত দেশ বিদেশে প্রশংশিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *