কে এই মুফতি আব্দুল হান্নান
নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
মুফতি আব্দুল হান্নানের জন্ম গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। তিনি আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। পাকিস্তানের পেসোয়ারে তিনি জঙ্গি প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। ভারতের উত্তর প্রদেশে তিনি ৬ মাস ছিলেন। আফগানিস্তান থেকে তিনি দেশে ফিরে গোপালগঞ্জের বিসিক এলাকায় একটি সাবানের কারখানা গড়ে তুলেন। কারখানার আড়ালে তিনি সেখানে জঙ্গি তৎপরতা চালান। তিনি ছিলেন হরকাতুল জেহাদ আল-ইসলামী, বাংলাদেশের প্রধান। এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি সারা দেশে জঙ্গি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেন। তিনি ও তার সংগঠন দেশে অনেকগুলো জঙ্গি হামলার হোতা।
১৯৯৯ সালে তিনি যশোরে উদিচী শিল্পগোষ্টীর অনুষ্টানে বোমা হামলা চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা করেছিলেন এবং আহত হয়েছিল ১৫০ জনের মত। পরবর্তী সময়ে গ্রেপতার হয়ে তিনি এ হামলার কথা স্বীকার করেছিলেন। ২০০১ সালের রমনা বটমুলে পহেলা বৈশাখে ছায়ানটের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে সিরিজ বোমা হামলা চালান। সেই ভয়াবহ হামলায় সেদিন শেখ হাসিনা বেচে গেলেও অনেক নিহত ও আহত হয়েছিল। তার নেতৃ্ত্বেই ২০০১ সালে কমিনিস্ট পার্টির এক রেলিতে বোমা হামলা হয়েছিল। সেখানে ৫ জন নিহত ও বহু আহত হয়েছিল।
২০০৪ সালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী সিলে্টে হযরত সাহজালালের মাজার জিয়ারত করতে গেলে সেখানে তার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। তিনি প্রানে বেচে গেলেও অনেকে আহত-নিহত হয়েছিল। তার নেতৃত্বেই ২০০৫ সালের ২১শে আগস্ট আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসের সামনে এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এই হামলায় শেখ হাসিনা গুরুতর আহত হয়ে প্রানে বেচে যান। কিন্তু স্পটেই সেদিন ২২ জনের মত মানুষ মারা গিয়েছিল। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী সেদিন গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শেষ অবদি মারা যান।
২০০৫ সালের ১লা অক্টোবর মুফতি হান্নান গ্রেপতার হন। তারপর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সিলেটে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলা মামলায় ১২ই এপ্রিল রাত ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাসি দেওয়া হয়। অবশেষে কোটালীপাড়ায় পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়।