জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের আয়ের উৎস

নিউজ ডেস্কঃবিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
ইসলামিক স্টেট বা আইএসকে মনে করা হয় বিশ্বের সব চেয়ে ধনী জঙ্গি গোষ্ঠী। আই এস দাবী করে, তারা ইরাক এবং সিরিয়ায় দখল করা জমি দিয়ে একটি ‘খেলাফত’ সৃষ্টি করেছে, যার আয়তন যুক্তরাজ্যের সমান। এখন প্রশ্ন উঠেছে, আই এস কিভাবে তাদের কার্যক্রমে অর্থায়ন করে? তাদের অর্থের উৎসইবা কী?
১. অনুদান
শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা এবং ধনী ব্যক্তি আই এসকে অর্থায়ন করত। এই দাতাগুলো ছিল মূলত সুন্নি সম্প্রদায়ের এবং তারা সিরিয়ার সংখ্যালঘু আলাউয়ি সম্প্রদায়ের রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য আই এসকে অর্থ যোগান দিত। আর এসব উৎস থেকে পাওয়া অর্থ ব্যবহার করে তারা বিদেশী যোদ্ধাদের সংগ্রহ করে সিরিয়া এবং ইরাকে নিয়ে যেত। বর্তমানে আই এস মোটামুটি স্বয়ং সম্পন্ন হয়ে উঠেছে।
২. তেল
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, আই এস ২০১৪ সালে তেল বিক্রি করে ১০ কোটি ডলার আয় করেছে। তারা অশোধিত তেল এবং তেল-ভিত্তিক সামগ্রী দালালদের কাছে বিক্রি করে, যারা সেগুলো তুরস্ক এবং ইরানে চোরাচালান করে – বা সিরিয়ার সরকারের কাছে বিক্রি করে। সম্প্রতি আই এস-এর অর্থের এই উৎস কমে গেছে তাদের দখলকৃ্ত তেল ক্ষেত্রগুলির উপর বিমান হামলার ফলে।
৩. অপহরণ
আইএসের আয়ের একটি বড় উৎস অপহরণ। ২০১৪ সালে মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে আই এস অন্ততপক্ষে দুই কোটি ডলার আয় করে। অপহরণকে আই এস তাদের পরিচিতি প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করে থাকে।
৪. চুরি-ডাকাতি, লুটতরাজ ও চাঁদাবাজি
আই এস তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার জনগণকে জোরপূর্বক চাঁদা দিতে বাধ্য করিয়ে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ ডলার আয় করে বলে মার্কিন অর্থ দফতরের তথ্য থেকে জানা যায়। যারা আইএসের নিয়ন্ত্রিত এলাকা দিয়ে যাতায়াত করে বা সেখানে ব্যবসা-বানিজ্য করে বা বসবাস করে, তাদের কাছ থেকে ‘নিরাপত্তা’ দেবার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে থাকে। আই এস ব্যাংক লুট করে, গবাদিপশু চুরি করে এবং পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করে অর্থ উপার্জন করে। আবার সিরিয়ার বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন চুরি করে বিক্রি করাও আই এস-এর অর্থের আরো একটি বড় উৎস।
৫. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর করারোপ
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ‘যিযিয়া’ নামে একটি বিশেষ কর দিতে হয় আই এস নিয়ন্ত্রিত এলাকায়। গত বছর ইরাকের মোসুল শহরে মসজিদগুলোতে একটি ঘোষণা পড়া হয়, যেখানে খৃষ্টানদের বলা হয় মুসলমান হয়ে যেতে, নয় ‘যিযিয়া’ দিতে। শহর ছেড়ে না চলে গেলে তাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়। আই এস এর এক বিবৃতিতে বলা হয় “তাদের আমরা তিনটি পথ দিয়েছি। হয় ইসলাম গ্রহণ করো, নয় যিযিয়া করসহ ধিমা চুক্তি কর। তারা যদি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে তাদের জন্য তলোয়ার ছাড়া আর কিছুই থাকবে না”।
৬. দাসত্ব
মেয়েদের অপহরণ করে যৌন দাস হিসেবে বিক্রি করে অর্থ আয় করে আই এস। স্থানীয় ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষের তথ্য অনুযায়ী, আই এস ইরাকের উত্তরে সিনজার শহর দখল করার সময় তারা হাজার হাজার ইয়াজিদি নারী এবং যুবতী মেয়েকে বন্দী করে এবং তাদের অনেককে যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করে। সেখানে তারা মেয়েদের ক্রীতদাসের হাটে নিয়ে বিক্রিও করে দেয়। হাট থেকে আই এস যোদ্ধারা এসে নিজের পছন্দ মত মেয়ে নিয়ে যেত।সূত্রঃবিবিসি