বিএনপি এখন মাইনকার চিপায়

নিউজ ডেস্কঃবিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারী,২০১৭ তে শেষ হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। তাই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ দীর্ঘদিন বিভিন্ন রাজনৈ্তিক দলগুলির সাথে সংলাপ করেন একটি সার্চ কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে। সেই সংলাপে আওয়ামীলীগ,বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ৩১টি রাজনৈ্তিক দল অংশ নেয়।

সংলাপ শেষে সকলের মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির প্রধান হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি ২০১২ সালে যে সার্চ কমিটি হয়েছিল তারও প্রধান ছিলেন। সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব ডঃ মোহাম্মদ সাদিক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এই সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের সার্চ করে তাদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করলে রাষ্ট্রপতি চূড়ান্তভাবে তাদের নিয়োগ করবেন।

EC-search-committee

কিন্তু ইতিমধ্যই এই সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ নয় বলে বিএনপি থেকে অভিযোগ আসছে। তারা এ কমিটিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে তাদের আওয়ামীলীগের দলীয় লোক হিসাবে চিহ্নিত করে। বিএনপির থেকে বলা হচ্ছে এই সার্চ কমিটি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে তারা নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন না করে আওয়ামীলীগের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। বিএনপি ও আওয়ামীলীগের পাল্টা পাল্টি বক্তব্য থেকে জানা যায় বিএনপি সার্চ কমিটির জন্য কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করেছিল রাষ্ট্রপতির কাছে। এমনও শুনা যাচ্ছে বিএনপি থেকে সার্চ কমিটির প্রধান করার জন্য সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। যিনি একসময় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ছিলেন।

আর এই সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চ্যানেলে লবিংও করা হচ্ছে। আর লবিষ্টদের বদৌলতে ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ থেকে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করে। সরকা্রী দল আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সবকিছু সংবিধান অনুযায়ী হবে। জাতিসংঘের আহবানে সারা দেওয়ার মত পরিস্থিতি এখনো তৈ্রী হয়নি। সরকার জাতিসংঘের এ প্রস্তাবে সারা দেবে না বলে মনে হচ্ছে। আর সরকারের এ প্রস্তাবে সারা দেওয়ার মত কারনও নাই।

এমতাবস্থায় সার্চ কমিটি থেকে আজ বলা হয়েছে যে, যে সমস্ত দল রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপে অংশ নিয়েছে তাদের প্রত্যেক দল ৫টি করে নাম প্রস্তাব করার জন্য। প্রস্তাবিত নামগুলি থেকে যাচাই বাছাই করে নিরপেক্ষদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। আর এখানেই নতুন খেলা শুরু হল বলে মনে হচ্ছে। ১ লা জানুয়ারীর মধ্যে নামগুলি জমা দিতে হবে। বিএনপি এমতাবস্থায় কি করবে? বিএনপি যদি নাম প্রস্তাব করে তাহলে প্রকারন্তরে তা্রা সা্র্চ কমিটিকে মেনে নিল বলে মনে হবে। আর যদি তারা নাম জমা না দিয়ে সার্চ কমিটি নিয়ে ব্যস্ত থাকে তাহলে তারা নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া থেকে ছিটকে পড়বে। এক্ষেত্রে তারা কুলও হারাবে, শ্যামও হারাবে। আবার তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ট্রেন মিছ করবে। এ অবস্থায় মনে হচ্ছে বিএনপি মাইনকার চিপায় পড়ে গেল। এখন দেখার বিষয় তারা কিভাবে এ চিপা থেকে বেড়িয়ে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.