তেত্রিশ বছর বয়সের ৮ম শ্রেনী পাস সুজয় বিশ্বাস এখন কোটিপতি!
অনলাইন ডেস্কঃবিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
তেত্রিশ বছর বয়সের ৮ম শ্রেনী পাস সুজয় বিশ্বাস এখন কোটিপতি! কোন জাদুতে? যৌন ব্যবসার জন্য ভিন্ রাজ্যে নারী পাচার করে সুজয় নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক কোটি টাকা জমিয়েছে। তা জানতে পেরে রাজস্থানের জোধপুরের উদয় মন্দির থানার পুলিশ তাজ্জব বনে গিয়েছে । দিন কয়েক আগে সেখানকার একটি তালাবন্ধ ঘর থেকে এক বাংলাদেশি কিশোরী ও এক তরুণীকে উদ্ধারের পরে পুলিশ সুজয়ের নাম জানতে পারে এবং তাকে গ্রেফতার করে।
উদয় মন্দির থানার তদন্তকারী অফিসার মদন বেনিওয়ালের দাবি, সুজয়ের আগে জোধপুর থেকে তার বাংলাদেশি সঙ্গিনী নন্দিনী ওরফে রুবিনাকে ধরা হয়। এরা দু’জনেই আন্তর্জাতিক নারী ও শিশু পাচার চক্রে জড়িত বলে জানা যায়। জেরায় দু’জনেই অপরাধ স্বীকার করেছে।সুজয় জানিয়েছে শুধু মেয়ে পাচার করেই সে কোটিপতি হয়েছে। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে গত ছ’মাসে।তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে সুজয়ের পরিবারের দাবি করছে।
সুজয়ের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রামে । ভারতের মূল জনপদ থেকে গ্রামটি বিচ্ছিন্ন। অনেকটা দ্বীপের মতো। তিন দিকে সঙ্কীর্ণ কপোতাক্ষ নদী, এক দিকে গদাধরপুর বাওড়। নদীর এ-পারে বাংলাদেশের চৌগাছা থানার শাহাজাদপুর গ্রাম। দু’দেশের মানুষ কথা বলেন নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে। কাঁটাতারের বেড়া নেই। তবে, গ্রামে ঢোকার মুখে বিএসএফ ক্যাম্প আছে। গ্রামে ৬৫টি পরিবারের বাস। গ্রামবাসীরা বেশির ভাগই ঠিকা শ্রমিক। যে দু’তিনটি একতলা পাকা বাড়ি রয়েছে, তার একটি সুজয়দের। এটি কোটিপতির বাড়ি মনে হওয়া কঠিন।
বাগদা ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রামে সুজয়ের বাড়ি
তিন ভাইয়ের মধ্যে সুজয় ছোট। বড়দা বাস-চালক। গ্রামের বাইরে বয়রা বাজারে বিশ্বাস পরিবারের একটি প্রসাধনী সামগ্রীর ছোট দোকান রয়েছে। মেজদার সঙ্গে সেই দোকান চালাত সুজয়। বছর তিনেক আগে সে বিয়ে করে। দু’বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। এহেন ‘নিরীহ’ এক যুবক যে আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রে জড়িত, তা কী ভাবে টের পেল পুলিশ?
উদয় মন্দির থানা সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে স্থানীয় এক জায়গা থেকে থানায় ফোন আসে। বলা হয়, একটি তালাবন্ধ ঘর থেকে মেয়েদের চিৎকার শোনা যাচ্ছে। পুলিশ এসে তালা ভেঙে ১৪ বছরের এক কিশোরী ও ১৮ বছরের এক তরুণীকে উদ্ধারের পরে জানতে পারে তাঁরা বাংলাদেশি। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের চোরাপথে প্রথমে পশ্চিমবঙ্গে, ও পরে রাজস্থানে নিয়ে আসে নন্দিনী। ওই ঘর থেকে পুলিশ একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পায়। যার মালিক সুজয়।কয়েক মাস আগে তিন বছরের একটি মেয়েকে অপহরণের মামলার সূত্রে উদয় মন্দির থানার পুলিশ ‘নন্দিনী’ নামটা আগেই জানত। তখন তাকে ধরা যায়নি। এ বার অবশ্য নন্দিনী ধরা পড়েছে।সুজয়ের বাড়ির খোঁজ মিলেছে তাকে জেরা করেই ।
দিন কয়েক আগে বাগদায় এসে উদয় মন্দির থানার পুলিশ যখন সুজয়কে ধরে নিয়ে যায়, তখনও প্রতিবেশীরা অনেকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে সুজয় নারী-পাচারে অভিযুক্ত! সুজয়ের স্ত্রী এ নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি।সূ্ত্রঃআনন্দ বাজার পত্রিকা