মীর কাশেম আলী নামা(৩১-১২-১৯৫২—০৩-০৯-২০১৬)

নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম

kasemali

মীর কাশেম আলী ছিলেন ইসলামী ভাবধারার একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী।তিনি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক পরিচালক, দিগন্ত মিডিয়ার চেয়ারম্যান ও দিগন্ত টিবির মালিক ছিলেন।ইবনেসিনা ট্রাষ্ট ও রাবেতা আল আলম আল ইসলামী এনজিওরও প্রতিষ্টাতা ছিলেন তিনি।জামাতে ইসলামীর মজলিশে সুরার সদস্য ছিলেন তিনি।জামাতে ইসলামীর সবচেয়ে সম্পদশালী সদস্য ও এদলটির অর্থের যোগান্দাতাও ছিলেন তিনি।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে ২রা নভেম্বর ২০১৪ সালে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

মীর কাশেম আলী ১৯৫২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর মানিকগঞ্জের সূতালড়ি ইউনিয়নের মুন্সী্ডাঙ্গী গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।মীর কাশেম আলীর পিতার নাম মীর তৈ্য়ব আলী ও মাতার নাম রাবেয়া বেগম।মীর কাশেম আলীর বাবা ছিলেন রেলত্তয়ের একজন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী।

মীর কাশেম আলী ১৯৬৭ সালে চিটাগাং কলেজিয়েট স্কুলে পড়ার সময় ইসলামী ছাত্রসংগে যোগদান করেন।তিনি জামাতে ইসলামীর মূল অর্থের যোগান্দাতা ছিলেন।তিনি দলটির অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন।

মীর কাশেম আলী কেয়ারী লিঃ এর চেয়ারম্যান, ইবনেসিনা ফার্মাসিউটিকেলের মার্কেটিং ডাইরেক্টর, ফুয়াদ আল খতিব চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ছিলেন।শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী কল্যান ট্রাষ্ট, আল্লামা ইকবাল সংসদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চিটাগাং, দারুল ইসান বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্টার ফর স্ট্রাটেজি ও পিস স্টাডিজের ব্যবস্তাপনায়ও ছিলেন তিনি।

১৯৭১ সালে মীর কাশেম আলী চিটাগং কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি ইসলামী ছাত্রসংগ, চিটাগং এর সভাপতি ছিলেন। ১৯৭১ সালের নভেম্বরে তিনি ইসলামী ছাত্রসংগের গুরুত্বপূ্র্ণ  নে্তা হিসাবে আবির্ভূত হন।একই বছর তিনি পূ্র্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংগের জেনারেল সেক্রেটারী নিযুক্ত হন।জামাতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রসংগ মিলে আল বদর বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১৯৭১ সালে  মুক্তিবাহিনী ও স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতন শুরু করে।

আল বদর বাহিনী চিটাগাং এর আন্দরকিল্লার মহামায়া বিল্ডিং দখল করে এর নাম রাখে ডালিম হোটেল।এ বিল্ডিং এর মালিক ছিল এক হিন্দু পরিবার।এই কুখ্যাত ডালিম হোটেলে ১৯৭১ সালে মুক্তিকামী মানুষ ও মুক্তিযুদ্ধাদের ধরে এনে নির্যাতন করা হত।এটি তখন টরচার সেল হিসাবে ব্যপক পরিচিতি লাভ করে। মুক্তিবাহিনী সদস্য কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম, টানটু সেন ও রঞ্জিত দাস এ টরচার সেলেই নিহত হয়। স্বাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে জানা যায় এই টরচার সেলের কমান্ডার ছিলেন মীর কাশেম আলী।স্বা্ধীনতার পর কাশেম সৌদি আরবে পালিয়ে যায়।

১৯৭৭ সালে দেশে ফিরে জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির গঠন করেন তিনি এর প্রেসিডেন্ট হন।এই ইসলামী ছাত্র শিবির ছিল ইসলামী ছাত্রসংগের নতুন নাম।

১৭৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে ওয়ার ক্রাইম ট্রাইবুনালে ১৪টি অভিযোগ আনা হয়।যার মধ্যে ১০টি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। ২টি অভিযোগে ওয়ার ক্রাইম ট্রাইবুনাল তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়।মীর কাশেম আলী সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে তার মৃত্যুদন্ড বহাল থাকে।অবশেষে তার রিভিউ পিটিশনও আপিল বিভাগ খারিজ করে দেয়। সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *