মুক্তিযোদ্ধা মিরনকে স্বীকৃতি দিতে নির্দেশ
যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকারদের গুলিতে আহত মিরন শেখকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নির্দেশ দিয়েছে ।
রায়ে মিরন শেখ সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে বিচারক এক পর্যায়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় যশোরের কেশবপুরের মহাদেবপুর গ্রামের জোবেদ আলী শেখের ছেলে মিরন শেখের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় যুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
প্রসিকিউশনের বিভিন্ন সাক্ষীকে উদ্ধৃত করে রায়ে বলা হয়, মিরন শেখ একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের একজন ‘সোর্স’ ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আশ্বিন মাসের প্রথম দিকে একদিন সকাল ৬টায় চিংড়া বাজার রাজাকার ক্যাম্পের ৩০-৪০ জন রাজাকার তার বাড়ি ও গ্রাম আক্রমণ করে।
সে সময় তারা মিরন শেখসহ স্বাধীনতার পক্ষের গ্রামবাসী ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় মিরন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক ও হত্যার জন্য রাজাকার ও তাদের সহযোগীরা পিছু ধাওয়া করে।অভিযুক্ত রাজকার আব্দুল খালেক রাইফেল দিয়ে গুলি করলে তার বাঁ হাতের আঙুল থেকে মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়। এরপর তাকে অপহরণ করে চিংড়া বাজার রাজাকার ক্যাম্পে আটকে মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য পেতে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। রাজাকার কমান্ডার মো. সাখাওয়াত হোসেন তার বাঁ পা ভেঙে দেয়, বলা হয় রায়ে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানে তিনি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মিরন তার বাঁ হাতের তিনটি আঙুল দেখিয়ে বলেন, ভারতের তাকি হাসপাতালে চিকিৎসার সময় ডাক্তাররা তার দুটি আঙুল কেটে ফেলেন। মামলার আরও তিনজন সাক্ষী মিরনকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে চিহ্নিত করে আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে জানান, মিরন ভারতের তাকি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন।
রায়ের পর প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, ট্রাইব্যুনাল মিরন শেখের কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এই মিরন শেখ যিনি যুদ্ধে এতখানি অবদান রেখেছেন, সেই লোক যদি আজ ভিক্ষা করে বেড়ায়, সেক্ষেত্রে সরকার ও জাতি তার জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করল?