তারেক নির্বাচনে অযোগ্য!
বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির জ্যৈষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মুদ্রা পাচারের মামলায় দণ্ড হওয়ায় নির্বাচনে অযোগ্যের তালিকায় নাম উঠে গেছে।
তবে দেশে ফিরে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে এবং রায় স্থগিত হলে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন তিনি।সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ ধারা অনুযায়ী, দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। সেই সঙ্গে সাজা ভোগ শেষে পাঁচ বছর পার করার পরই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় নির্বাচনেও দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিও অযোগ্য।
মুদ্রা পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেককে সাতবছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দেয় হাই কোর্ট।
এক যুগ আগে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে যুক্ত হয়েই দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হন তারেক। এরপর ২০০৯ সালের কাউন্সিলে জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পদোন্নতি ঘটে তার। গত মার্চে টানা দ্বিতীয়বার জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানের পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক।তার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাসহ দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে।দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান হলেও তারেক রহমান এ পর্যন্ত স্বীকৃত কোনো ভোটে অংশ নেননি। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে দলের পক্ষে মনোনয়ন পেয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে বাতিল হয়েছিল।
২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “লন্ডনে বসে আপিল হবে না। আমরা যদি উনাকে ধরে আনতে পারি, অথবা তিনি যদি এসে আত্মসমর্পণ করেন, তাহলে আপিল করতে পারবেন।”
যদিও বিএনপি জানিয়েছে, তারেক রহমান দেশে ফিরলে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন শুক্রবার বলেন, “হাই কোর্টের এই সাজা ন্যায় বিচারের পরিপন্থি। হাই কোর্ট একতরফাভাবে এই বিচার করেছেন। সেখানে তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আইনজীবী বক্তব্য রাখতে পারেন নাই।“ইনশা-আল্লাহ যখন সময় আসবে, তারেক রহমান এই মাটিতে আসতে পারবেন। আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করব। আপিল করে আমরা দেখাতে পারব, এই মামলা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে হয়েছিল।”
আপিল প্রসঙ্গে খন্দকার মাহবুব বলেন, “আইনের বিধান অনুযায়ী যে পর্যন্ত না তারেক রহমানসাহেব বাংলাদেশে আসেন এবং এখানে হাজির হন, সেই পর্যন্ত তার পক্ষে আপিল করা সম্ভব না।”