যুদ্ধাপরাধ: নোয়াখালীর চার আসামির বিচার শুরু
একাত্তরে গণহত্যা, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের তিন অভিযোগে নোয়াখালীর চার আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের জন্য ৭ অগাস্ট দিন ঠিক করে দিয়েছে।
আসামিদের মধ্যে মো. আব্দুল কুদ্দুস (৮৪), মো. জয়নাল আবদিন (৭৩) ও আমির আহম্মেদ ওরফে আমির আলী (৭০) কারাগারে আছেন।
অভিযোগ গঠনের শুনানিতে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচারের দাবি জানান।
অপর আসামি আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুরকে (৬৭) পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার চালানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এ মামলার শুরুতে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল প্রসিকিউশনের তদন্ত দল। মো. ইউসুফ আলী (৭৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।
কিন্তু গত ১৯ মে মাসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হওয়ায় এ মামলার অভিযোগ থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ গঠনের শুনানিতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান ও মাসুদ রানা। পলাতক মনসুরের পক্ষে মামলা লড়ছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। আর প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন জাহিদ ইমাম।
প্রসিকিউশনের তদন্ত দল ২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর নোয়াখালীর পাঁচজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে এবং পরের বছর ৩১ অগাস্ট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এরপর প্রসিকিউশনের আবেদনে ৫ অক্টোবর পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই নোয়াখালীর মাইজদী উত্তর ফকিরপুর থেকে আমির আলী, নোয়াখালী সদরের সৈয়দপুর গ্রাম থেকে জয়নাল এবং লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার পোড়াগাছা গ্রাম থেকে ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ট্রাইব্যুনাল ১৪ অক্টোবর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয়। সোমবার তিন অভিযোগে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
প্রথম অভিযোগ: একাত্তরের ১৫ জুন নোয়াখালীর সুধারামে ৪১ জনকে হত্যা। এ অভিযোগে চার আসামির সবাই অভিযুক্ত।
দ্বিতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ১৩ সেপ্টেম্বর সুধারামে গণহত্যা। এ অভিযোগে আসামি করা হয়েছে আমির, মনসুর ও জয়নালকে।
তৃতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ১৩ সেপ্টেম্বর নয় জনকে হত্যা। এ অভিযোগে আমির ও মনসুর আসামি।
প্রসিকিউশনের পক্ষে এ মামলায় মোট ২৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।