কোকেন মামলায় নূর মোহাম্মদের জামিন স্থগিত
চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের সঙ্গে তরল কোকেন আনার মামলায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের জামিন স্থগিত করেছে চেম্বার বিচারপতি।
হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি করে সোমবার অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জামিনে স্থগিতাদেশ দিয়ে বিষয়টি ১৪ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চেম্বার বিচারপতি নূর মোহাম্মেদের জামিন স্থগিত করে ১৪ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছে। ফলে নূর মোহাম্মদ আপাতত মুক্তি পাচ্ছেন না।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে গত ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।
পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বন্দরের পরীক্ষায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় ২৮ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও কর্মচারী গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। পরে আদালত মামলাটিতে চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেয়।
গত ১৯ নভেম্বর এ ঘটনায় মাদক আইনে করা মামলায় আটজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান। এতে ৫৮ জনকে সাক্ষী করা হয়।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয় অভিযোগপত্রে।
কিন্তু এজাহারভুক্ত প্রধান আসামির নাম অভিযোগপত্রে না থাকায় চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম রহমত আলী গত ৭ ডিসেম্বর তা গ্রহণ না করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কমকর্তাকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য র্যাবকে দায়িত্ব দেন।
র্যাব-৭ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৫ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে।
বিচারিক আদালত নূর মোহাম্মদকে জামিন না দেওয়ায় তিনি হাই কোর্টে আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৬ জুন হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ অন্তবর্তীকালীন জামিন দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে, যা সোমবার চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।