উত্তরার অস্ত্রের পেছনে বিএনপি-জামায়াত, ইঙ্গিত পুলিশের
উত্তরার দিয়াবাড়ি খাল থেকে উদ্ধার অস্ত্রগুলো ‘নতুন ও অব্যবহৃত’ জানিয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বিএনপি-জামায়াত জোটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘নারী-শিশু হত্যায়’ জড়িত চক্রটিই ওই অস্ত্র মজুদ করেছিল বলে তাদের ধারণা।
ওই অস্ত্রের ‘প্রকৃত মজুদদারদের’ খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এটি কোনো সাধারণ সন্ত্রাসীর কাজ নয়। এগুলো মজুদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি চক্র জড়িত।
“আমাদের ধারণা, যারা ২০১৫ সালে নারী ও শিশু পুড়িয়ে মেরেছে, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যারা দেশকে হেয়-প্রতিপন্ন করতে চায়, সেই চক্রটি এই অস্ত্রগুলো মজুদ করেছিল।”
দশম জাতীয় সংসদের বর্ষপূর্তি ঘিরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের জন্য সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করে আসছে সরকার। যেসব ঘটনায় নিহতদের মধ্যে নারী এবং শিশুও রয়েছে।
শনিবার উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ি খাল থেকে ৯৭টি পিস্তল, ৪৬২টি ম্যাগাজিন, এক হাজার ৬০টি গুলি, ১০টি বেয়নেট ও ১০৪টি গুলি তৈরির ছাচ উদ্ধার করা হয়। পরদিন এক কার্টন বন্দুকের ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পিস্তলগুলোর মধ্যে ৯৫টিই বিদেশি; বেশিরভাগই সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের। যেসব ম্যাগাজিন শনিবার পাওয়া গেছে তার মধ্যে ২৬৩টি এসএমজির। আর গুলির মধ্যে ২২০টি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোর পিস্তলের এবং ৮৪০টি নাইন এমএম পিস্তলের।
পুলিশের উপ কমিশনার নুরুল আলম শনিবার জানিয়েছিলেন, অস্ত্রগুলো নতুন ও ব্যবহার উপযোগী।

ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান বলেন, “অস্ত্রগুলো একেবারই আনইউজড এবং নতুন। এই অস্ত্রগুলো কোথায় তৈরি হয়েছে- তা লেখা নেই। কোনো লট নম্বর নেই। ঢাকার বাইরে থেকে এগুলো আসতে পারে।”এ ঘটনায় কারা জড়িত- তা জানতে তদন্তে জোর দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তদন্ত করবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় রাজধানীর তুরাগ থানায় জিডি করা হয়েছে। পুলিশের যতটুকু মেধা, সামর্থ্য ও যোগ্যতা রয়েছে পুলিশ খুঁজে বের করবে কারা, কেন- এই অস্ত্রগুলো মজুদ করেছিল।”
জঙ্গি দমনে সাত দিনের সাঁড়াশি অভিযান শেষ হওয়ার পরদিন একটি গাড়ি দেখে এক কনস্টেবলের ‘সন্দেহ হওয়ায়’ অনেকটা আকস্মিকভাবে ওই অস্ত্র ও গুলির সন্ধান পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ।
গত দুই বছরের একের পর এক হত্যাকাণ্ড এবং জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্যও বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করে আসছে সরকার।