করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর জীবনাবসান

দেশ বরেণ্য অভিনেতা সাদেক বাচ্চু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যুর ঘোষনা দেয় রাজধানীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ আন্ড হাসপাতাল। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জ্বরে আক্রান্ত সাদেক বাচ্চুকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ই সেপ্টেম্বর তার করোনা টেস্ট পজেটিভ আসে। পরে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল থেকে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ আন্ড হাসপাতাল নিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হল রেডিও, টেলিভিশন, মঞ্চ ও চলচ্চিত্রের তার পাচ দশকের বনাঢ্য জীবন।

মাহবুব আহমেদ সাদেক (১ জানুয়ারি ১৯৫৫ – ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ) একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, নাটক রচয়িতা, নাট্য নির্দেশক ও ডাক বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি সাদেক বাচ্চু মঞ্চনামে সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পরিচিতি লাভ করলেও মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশনে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৫ সালে শহিদুল আমিন পরিচালিত রামের সুমতি-চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। ২০১৮ সালে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

মাহবুব আহমেদ সাদেক-এর পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুর জেলায়। তবে তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ডাক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তিন মাস পর তার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর ১৫ বছর বয়সে ডাক বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন। চাকুরীরত অবস্থায় তিনি টি এন্ড টি কলেজ হতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি শাহনাজ জাহানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।

সাদেক বাচ্চু অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবননদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখী’ প্রভৃতি।